অপর্ণা সেন (Aparna Sen), বাংলা টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রির উজ্জ্বলতম নক্ষত্র। একাধারে পরিচালক, একাধারে অভিনেত্রী, আবার লেখিকা কি নেই তাঁর ঝুলিতে। ‘আমি মিস ক্যালকাটা নাইনটিন সেভেনটি সিক্স…’ এই গান সকলের মধে গেঁথে রয়েছে, আর এই গান শুনলেই মনে পড়ে তাঁর কথা। পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার। সত্যজিৎ রায়ের একাধিক ছবিতে অভিনয় করেছেন, অভিনয় করেছেন উত্তম কুমার (Uttam kumar), সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (Soumitra Chatterjee) সকলের সাথেই।
1961 সালে ‘সমাপ্তি’ ছবির হাত ধরেই টলিউডে আসা। এরপর একে একে ‘আকাশ কুসুম’, ‘বাক্স বদল’, ‘মেমসাহেব’, ‘বসন্ত বিলাপ’, ‘একান্ত আপন’, ‘মহাপৃথিবী’, ‘উনিশে এপ্রিল’, ‘শ্বেত পাথরের থালা’ সহ আরও বিখ্যাত বিখ্যাত ছবিতে অভিনয় করেছেন। শুধু অভিনয় নয়, পরিচালনাও করেছেন অনেক ছবির। অত্যন্ত অল্প বয়সে পরিচালকের আসনে বসে পরিচালনায় তৈরি হয়েছে ’36, চৌরঙ্গী লেন’।
এছাড়াও পরিচালনা করেছেন, ‘পরমা’, ‘পারমিতার একদিন’, ‘দি জাপানিজ ওয়াইফ’, ‘ইতি মৃণালিনী’, ‘গয়নার বাক্স’, ‘আরশীনগর’ প্রভৃতি ছবি। এই অপর্ণা সেনের সাফল্য মন্ডিত কেরিয়ার। তখনকার দিনে উত্তম কুমারের সাথে কাজ করা মানে একটা বিরাট ব্যাপার। যে সময় লোকে উত্তমের পাশে সুচিত্রাকে চাইতে, সে সময় দাঁড়িয়ে উত্তমের সাথে একটা নয় দুটো নয় মোট ১৪ টা ছবি করেছেন।
সেসব ছবিও বেশ হিট। ‘মেমসাহেব’, ‘আলোর ঠিকানা’, ‘সোনার খাঁচা’, ‘রাতের রজনীগন্ধা’ সহ আরও অনেক ছবি। এই ১৪ এর জায়গায় ১৫ হতে পারত, কিন্তু নিজের কারণেই এই ১৫ হতে দেননি। এর জন্য এখনও আফসোস করেন অপর্ণা সেন।
উত্তম কুমার অভিনীত শেষ ছবি ‘ওগো বধূ সুন্দরী’ তে উত্তম কুমারের স্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করার জন্য সুযোগ এসেছিল, কিন্তু অপর্ণা সেন রাজি হননি, কারণ এটা ছিল সেকেন্ড লিড চরিত্র তাই তিনি করেননি। তাই তাঁর আক্ষেপ। আর এই ছবিটি করতে করতেই উত্তম কুমার মারা যান। অপর্ণা সেনের আফসোস এই কারণেই, যদি জানতেন উত্তম কুমারের সাথে কাজ করার সুযোগ তিনি আর পাবেন না, তাহলে এই সুযোগ হারাতেন না।