বাদ পড়তে পড়তে একসময় ছেড়ে দিয়েছিলেন অভিনয়ের আশা! আজ সকলের কাছে প্রিয় ‘ফড়িং’ অভিনেত্রী

শুরু থেকেই দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছে স্টার জলসায় জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘আলতা ফড়িং’ (Alta Phoring)। এই ধারাবাহিকের কাহিনী একটু অন্যরকম। নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়ে ফড়িং, মা

Saranna

alta phoring actress kheyali mondal talks about her journey

শুরু থেকেই দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছে স্টার জলসায় জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘আলতা ফড়িং’ (Alta Phoring)। এই ধারাবাহিকের কাহিনী একটু অন্যরকম। নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়ে ফড়িং, মা কাজ করেন ইটভাঁটায়। ফড়িং বেশ ভালো জিমন্যাস্টিকস পারে। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়ে মা মেয়ে আলাদা হয়ে পরে। বন্যায় ঘর বাড়ি সব ভেসে যায়, ফড়িং ভেবেছিলো সে হয়তো তার মাকে হারিয়েই ফেলেছে। আর তখনই নায়কের এন্ট্রি হয়, সে ফড়িংকে জল থেকে উদ্ধার করে। এইভাবেই শুরু হয়েছিল ধারাবাহিকের প্রথম প্রোমো। তারপর ধীরে ধীরে এইভাবেই এগোতে থাকে কাহিনী।

ফড়িং এর ভূমিকায় অভিনয় করছেন, অভিনেত্রী খেয়ালী মন্ডল (Kheyali Mondal)। আর নায়ক অভ্রর ভূমিকায় অভিনয় করছেন অভিনেতা অর্ণব বন্দ্যোপাধ্যায় (Arnab Banerjee)। ধারাবাহিকের আরও এক বিশেষ চরিত্রে অর্থাৎ নায়কের মায়ের চরিত্রে আছেন অভিনেত্রী তুলিকা বসু। খেয়ালীর এটা প্রথম অভিনয় নয়, এই ধারাবাহিকের আগে সে অভিনয় করেছে, কালার্স বাংলায় সম্প্রচারিত ধারাবাহিক ‘মৌ-এর বাড়ি’ ধারাবাহিকে। আর অর্ণব বন্দ্যোপাধ্যায়ও ছোটো পর্দার খুব জনপ্রিয় মুখ। তাঁকে দেখা গেছে জি বাংলার ‘আলো-ছায়া’ ধারাবাহিকে, এছাড়াও দেখা গেছে স্টার জলসার ‘শ্রীময়ী’ ধারাবাহিকে।

alta phoring actress kheyali mondal talks about her journey1

খেয়ালী কালার্স বাংলায় অভিনয় করলেও দর্শকদের কাছে একটু অপরিচিত মুখ। আর তাই অনুরাগীদের কৌতূহল থাকে অভিনেত্রীর জীবন সম্পর্কে। আসুন জেনে নিই কে এই অভিনেত্রী? কথা থেকে তার এই যাত্রা শুরু হয়েছে? খেয়ালী দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার মেয়ে। অভিনেত্রী একজন দক্ষ নৃত্যশিল্পী। আর এই নাচের জন্যই পঞ্চম শ্রেণী থেকেই জিমন্যাস্টিকের প্রশিক্ষণ নেওয়া। নাচের জন্য ২০২০ তে তিনি ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছেন। নাচ দিয়েই তাঁর কেরিয়ারের শুরু, তারপরেই আসা অভিনয়ে।


প্রথমে তিনি অডিশন দিতে থাকেন অভিনয়ের জন্য। অডিশন দিতে দিতে সে একসময় বিরক্ত হয়ে যায়। কারণ কোনো অডিশনে সে সিলেক্টেড হয়না, আবার সিলেক্টেড হলেও শ্যুটিং হওয়ার দুদিন আগেই ক্যানসেল হয়ে যায়। এরপর সে বিরক্ত হয়ে অডিশন দেওয়া এবং অভিনয় করার আশা দুটোই সে ছেড়ে দেয়। তারপর কালার্স-এরই ডান্স রিয়ালিটি শোয়ে অংশগ্রহণ করে তৃতীয় স্থানে উঠে আসেন। এরপরই সুযোগ পান ‘মৌ-এর বাড়ি’ ধারাবাহিকের পার্শ্ব চরিত্রে।

এই ধারাবাহিকে অভিনয় করতে করতে তাঁর কাছে ফোন আসে অডিশনের। অডিশনে খেয়ালীকে জিমন্যাস্টিক করতে বলা হয়, সে জিমন্যাস্টিক করেই নতুন ধারাবাহিক ‘আলতা ফড়িং’ এ মুখ্য চরিত্রে সুযোগ পান। এরপর থেকেই চলছে অভিনয়। অভিনেত্রী জানান, ‘আমার অভিনয়ের অতটা শখ ছিল না, কিন্তু আমার বাবা মেয়ের খুব ইচ্ছা ছিল মেয়ে অভিনেত্রী হোক’। মেয়েকে টিভির পর্দায় দেখতে পাওয়া খেয়ালীর বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিল।


অভিনয় জীবনের পথ এতটাও মসৃণ ছিল না। কারণ তাঁর বাড়ি ছিল প্রত্যন্ত গ্রামে, যেখানে থেকে কলকাতায় আসতে সময় লাগত অনেক। কখনও গাড়ি না পেয়ে আধঘন্টা হেঁটে ট্রেনে বাসে করে এসেছেন শ্যুটিং ফ্লোরে। তবে এখন তিনি কলকাতাতেই থাকেন দিদির বাড়িতে। তিনি অভিনয়ের পাশাপাশি পড়াশোনাটাও সমান ভাবে চালাচ্ছেন। স্লটলেকের টেকনো ইন্ডিয়া কলেজের বিবিএর ছাত্রী তিনি। অভিনয় এবং পড়াশোনা দুটোই ব্যালেন্স করছেন।

সাধারণত বর্তমান সময়ে নবাগতা অভিনেত্রীরা নিজেদের সৌন্দর্যেই অভিনয় দুনিয়ায় আসেন, কিন্তু খেয়ালী মন্ডল সুন্দরী হয়েও অডিশনে অংশগ্রহণ করেও সুযোগ পাননি বার বার প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পরে জিমন্যাস্টিকস এবং দক্ষ নাচের দ্বারা আজ সে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছেন। অভিনয়ের সুযোগ পেয়ে সে বেশ খুশি। কিন্তু তবুও কোথাও স্কুল বা কলেজে সেই শিক্ষার্থীর সাধারণ জীবনযাপনটা হলো না, এটা অভিনেত্রীর জীবনে একটা আক্ষেপ স্বরূপ। তবে এই অভিনয়ের মধ্যে দিয়েই তিনি এখন এগিয়ে যেতে চান। অনেক ছোট থেকেই তিনি কাজ করছেন এমনটাও জানান।