উত্তম কুমার (Uttam Kumar), যার নাম শুনলে চোখের সামনে ভাসে সহজ সুন্দর সেই অবয়ব। যার রূপে পাগল এযুগের নারীরাও। উত্তম কুমারের সময়ের মেয়েরা তো তাঁর প্রেমে মোহিত ছিলেন, সবার স্বপ্নের নায়ক। আবার যীশু-পরমব্রতর সময়ের মেয়েরাও উত্তম প্রেমে পাগল। ১৯৪৮ সালে দৃষ্টিদান থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত মোট ২০২ টি ছবি রয়েছে তাঁর ঝুলিতে।
এতটাই জনপ্রিয় যে, মৃত্যুর ৪২ বছর পরেও এখনও তাঁর জীবন নিয়ে চর্চা হয়। অভিনয় জীবন, ব্যক্তিগত জীবন, খাওয়া-দাওয়া, সাজপোশাক, হাঁটাচলা সবকিছু নিয়ে সবসময় চর্চা করা হয়। আসলে মানুষের কৌতূহল হয় বলেই এত চর্চা। ওই যেমন জ্বলন্ত ধূপ নিভে গেলেও, তাঁর সুবাস রয়ে যায় পুরো ঘরটায়, ঠিক তেমনই উত্তম কুমারের জীবন আগুন নিভে গেলেও তার সুবাস রয়ে গেছে।
এই জনপ্রিয় অভিনেতা তথা মহানায়ক কত টাকা পারিশ্রমিক পেতেন জানেন? সেই সময়ের নিরিখে ২.৫ থেকে ৩ লাখ টাকা পারিশ্রমিক নিতেন। শোনা যায় উত্তম কুমার ছাড়া এই পারিশ্রমিক আর কেউ পেতেননা। তৎকালীন সময়ে উত্তম কুমারের চাহিদা ছিল তুঙ্গে। একের পর এক হিট ছবি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন। আর দর্শকরা সেই উপহার গ্রহণ করেছেন।
অভিনয়ে পা দিয়েই সুখের মুখ দেখেননি তিনি। ১৯৪৮ এ ‘দৃষ্টিদান’ ছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন। এটা অতটা ছাপ ফেলেনি দর্শকদের মনে। এরপর ১৯৪৯ ‘কামনা’ ছবি করেন, সেটাও সুপার ফ্লপ। এরপর মুক্তি পায় ‘মর্যাদা’ ও ‘ওরে যাত্রী’ এটাও ফ্লপ। পরপর আরও তিনটি ছবি ফ্লপ। ইন্ডাস্ট্রিতে তাঁর নাম হয়, “ফ্লপ মাষ্টার জেনারেল”। কিন্তু তাও তিনি দমে যাননি।
ভাগ্যের চাকা ঘোরে ১৯৫২ সালে নির্মল দের পরিচালনায় ‘বসু পরিবার’ ছবির মধ্যে দিয়ে। এর পরের বছর ১৯৫৩ সালে ‘সাড়ে চুয়াত্তর’ ছবি তাঁকে আরও পরিচিত করে তোলে। এরপর একে একে অনেক কালজয়ী সিনেমা বাংলার দর্শকদের উপহার দেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, – ’হারানো সুর’, ‘পথে হল দেরী’, ‘সপ্তপদী’, ‘চাওয়া পাওয়া’, ‘বিপাশা’, ‘জীবন তৃষ্ণা’ এবং ‘সাগরিকা’ সহ আরও অনেক ছবি।