যারা আজ জনপ্রিয়তার শিখরে রয়েছে, তারা যে সবাই সোনার চামচ মুখে দিয়ে জন্মেছে এমনটা নয়, তাদের জীবনেও রয়েছে, নানাবিধ চড়াই উতরাই। সেগুলো পার করেই আজ এসে পৌঁছেছেন শ্রেষ্ঠত্বের জায়গায়। তেমনই একজন অভিনেত্রী হলেন, পিয়ালী শাসমল (Piyali Sasmal)। যাকে বর্তমানে দেখা যাচ্ছে জি বাংলার (Zee Bangla) জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘খেলনা বাড়ি'(Khelna Bari)তে অলোকার চরিত্রে।
অভিনেত্রীর পথচলা অতটাও মসৃণ ছিল না, খুবই কষ্ট করে আজ এই জায়গায় এসে পৌঁছেছে। গ্রামের বাড়ি মেদিনীপুর। ছোটবেলা কেটেছে মালদাতে। পড়াশোনার জন্য কলকাতায় আসেন। ভূগোলে এমএসসি করেছেন। ছোট থেকেই পড়াশোনায় বেশ ভালো ছিলেন। পড়াশোনা করতে করতেই সুযোগ আসে অভিনয়ের। অভিনেত্রীর কোনোদিনই ইচ্ছা ছিল না, অভিনেত্রীর মায়ের খুব ইচ্ছা ছিল।
‘এবিপি পন্ডস নন্দিনী ২০১৯’ দিয়ে শুরু হয়েছিল কেরিয়ারের যাত্রা। এখান থেকেই সুযোগ আসে অভিনয়ের। আড়াই বছরে অনেকগুলো ধারাবাহিকেই অভিনয় করেছেন। অভিনয়ের তালিকায় রয়েছে, সাঁঝের বাতি, গাঁটছড়া, খেলনা বাড়ি। সব ধারাবাহিকের থেকে খেলনা বাড়ির অলোকা (Aloka) চরিত্রটি তাঁর বেশ পছন্দের। এই অভিনয়ে আসার জন্য নিজের মা ছাড়া আর কাউকে পাশে পাননি। বাড়ির প্রত্যেকটি মানুষ তাঁর প্রতি হিংস্র হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ ভুল মানুষের প্রেমে পড়েছিলেন ‘পর্ণা’! প্রথবার নিজের জীবন নিয়ে মুখ খুললেন পল্লবী
অভিনেত্রী পিয়ালী শাসমল (Piyali Sasmal) এর সাক্ষাৎকার থেকে জানা যায়, কলকাতায় এসে অ্যাডমিশন নেওয়ার জন্য বাগুইহাটিতে পিসির বাড়ি থাকতেন। কারণ অ্যাডমিশন নেওয়া, ফর্ম সাবমিট করা সবটার জন্য দূর থেকে তো বারবার আসা সম্ভব হত না। তাই আত্মীয়ের বাড়ি থেকে কাজগুলো করছিলেন। কিন্তু দু দিন থাকার পর সেই পিসির বাড়ি আর পিসির বাড়ি রইল না, ঘনিয়ে এল অন্ধকারের ছায়া।
পিসির বাড়ির সকলে বলতে লাগল, মেয়ে বড় হইছে মেয়েকে বিয়ে না দিয়ে, কলেজে অ্যাডমিশন দেওয়ানো হচ্ছে। একদিন রাত্রে তাদের বলা হয়, আমাদের বাড়িতে তোমরা মা, মেয়ে থাকলে সমস্যা হচ্ছে, তোমরা অন্য কোথাও থাকলে ভালো হয়। ওইদিন রাত ১২ টার সময় সেই বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসেন। পরেরদিন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা, কোনোভাবে হোটেল বুকিং করে থেকে পরীক্ষা দেন।
মা চলে যান মালদাতে, পিয়ালী কলকাতায় হোস্টেলে থেকে পড়াশোনা করেন। এমনকি পিয়ালীকে পড়াশোনা করানোর জন্য এবং অভিনয় করানোর জন্য পিয়ালীর মাকে পরিবারের হাতে মার খেতে হয়েছে।আজ পিয়ালী অনেকটাই সফল। পরিবারের লোকজন এই সাফল্য দেখে হিংসায় জলে যায়। তবে ওসব নিয়ে মাথা ঘামান না। নিজের কর্মে সে অনড়। এইভাবেই পার্শ্ব চরিত্র থেকে একদিন মুখ্য চরিত্র হয়ে উঠবে। যা তাঁর সংগ্রামের অ্যান্টিসেপটিক মলম হয়ে উঠবে।