আমাদের চারপাশে পরিবেশে এমন কিছু জীব বসবাস করে যাদের আপাত দৃষ্টিতে দেখে অনুমান করাও মুশকিল তারা কতটা বিপজ্জনক বা জীবন বাঁচাতে কতটা সহায়ক। কিছু কিছু জীব এমন আছে যাদের দেখে খুব বিপজ্জনক মনে হলেও তাদের থেকে কোনো ক্ষতিই হয়ত হয়না। আবার এমন কিছু জীব আছে যাদের দেখে খুব তুচ্ছ মনে হলেও আদতে তারাই বেশ ভয়ঙ্কর ও বিপজ্জনক হয়।
কাঁকড়া বিছের (Scorpion) সাথে আমরা কমবেশি সকলেই পরিচিত। কিন্তু নীল কাঁকড়াবিছে দেখেছেন কখনও? জানেন তার সম্মন্ধে? আজ আপনাদের জানাবো সেই বিরল প্রজাতির কাঁকড়াবিছে সম্বন্ধে কিছু অজানা তথ্য। কাঁকড়াবিছে একটি বিষাক্ত প্রজাতির প্রাণী বিশ্বে এই প্রাণীর এখনো অনেক প্রজাতি আছে যাদের সম্মন্ধে কোনো তথ্যই আমাদের জানা নেই। প্রায় প্রতিনিয়ত যাদের এক নতুন প্রজাতির পরিচয় জানা যায়।
বিশ্বে এমন অনেক কীট-পতঙ্গ, জীবজন্তু আছে যাদের সম্পর্কে আমরা অন্ধকারে। কিছুই জানা নেই। তাদের বাস, খাদ্য, পরিবেশ, সে কতটা বিপজ্জনক বা কতটা সহায়ক সবকিছুই আমাদের জানার বাইরে থাকে। এমনি এক পরিবারের অন্তর্গত বিরল প্রজাতির কাঁকড়াবিছে (Scorpion) এই নীল স্করপিয়ন। এই কাঁকড়াবিছের বিষ সবচেয়ে বিষাক্ত। এর ১ লিটার বিষের মূল্য ৭৬ কোটি টাকা।
থাইল্যান্ডে পাওয়া যাওয়া শঙ্খচূড় সাপের বিষের থেকেও বেশি মূল্যের এই কাঁকড়াবিছের বিষ। থাইল্যান্ডে সাপেদের এক এমন প্রজাতির খোঁজ মেলে যাদের আমরা শঙ্খচূড় নাম চিনি। এই সাপ বিশ্বের সবচেয়ে বিষাক্ত সাপেদের মধ্যে একটি প্রজাতির। এই সাপের এক লিটার বিষের মূল্য ৩৫ কোটি টাকা। এখনও পর্যন্ত এই সাপের বিষই ছিল সবচেয়ে বেশি মূল্যবান বিষ। কিন্তু এই নীল কাঁকড়াবিছের বিষের মূল্য তাকেও ছাপিয়ে যায় এতটাই প্রয়োজনীয় ও দুর্মূল্য এই বিষ।
যে নীল কাঁকড়াবিছের প্রজাতির কথা আলোচনা করছি সেটি মধ্য আমেরিকার কিছু কিছু অংশে এখনো অবধি খোঁজ পাওয়া কাঁকড়াবিছের ৩৬ টি প্রজাতির একটি। এই কাঁকড়াবিছেটি বুথিডে পরিবারের অন্তর্গত প্রজাতিদের একটি। এটি কাঁকড়াবিছের প্রজাতির সব থেকে বড়ো একটি পরিবার। এই পরিবারের অন্তর্গত প্রায় ১২৩০ টি কাঁকড়াবিছের প্রজাতি বিশ্বে বর্তমান। কিউবা দ্বীপে কাঁকড়াবিছের এই প্রজাতির দুর্মূল্য বিষ ওষুধে ব্যবহৃত হয়।
এর বিষের মধ্যে ৫০ টি মতন যৌগের সন্ধান পেয়েছেন গবেষকরা। তবে সবকটি যৌগের বিশ্লেষণ করা এখনো সম্ভবপর হয়ে ওঠেনি। গবেষণা এখনও চালু রয়েছে। গবেষকদের অনুমান এই কাঁকড়াবিছের দুষ্প্রাপ্য ও দুর্মূল্য বিষ দিয়ে সারানো যেতে পারে কঠিন দুরারোগ্য ব্যাধিও। ক্যান্সারের মত রোগে এই বিষ সহায়তা করতে পারে বলেও তারা অনুমান করেন।