টলিউড ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় মুখ হল, কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায় (Koneenica Banerjee)। যাঁর পথচলা হয়েছিল ছোটো পর্দা দিয়ে। তিনি প্রথম ডেবিউ করেন জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘স্বপ্ননীল’ দিয়ে। শুধু ছোটো পর্দায় সীমাবদ্ধ ছিলেন তা কিন্তু নয়। এরপরই দেখা যায় বড় পর্দায়। ২০০৬ এ ‘তিন এক্কে তিন’ সিনেমা দিয়ে বড় পর্দায় ডেবিউ হয় তাঁর। এরপরই চলতে থাকে পথচলা।
তাঁকে দেখা গিয়েছে, এক আকাশের নিচে, কখনো মেঘ কখনো বৃষ্টি, অন্দরমহল-এর মতো জনপ্রিয় ধারাবাহিকে। দেখা গিয়েছে, ‘কণ্ঠ’, ‘হামি’, ‘মুখার্জী দার বউ’, ‘চতুষ্কোণ’ সহ আরও অনেক ছবিতে । অভিনেত্রীর শেষ ধারাবাহিক ছিল ‘আয় তবে সহচরী’। এই ধারাবাহিকে অভিনয় করেছিলেন মুখ্য চরিত্র সহচরীর ভূমিকায়। কিন্তু ধারাবাহিকটি সম্পূর্ণ করতে পারেননি।
অভিনয়ের শ্যুটিং করতে করতেই আচমকা শরীর অসুস্থ হয়ে যায়। স্পাইনাল কর্ডে যন্ত্রণা। তিনি দাঁড়াতেই পারছিলেন না। চেন্নাইয়ে নিয়ে যাওয়া হয় সুস্থতার জন্য। সেখানে গিয়ে জানা যায়, মেরুদণ্ডের একটি অংশে জটিল সমস্যা হয়েছে। আর তাই একমাত্র উপায় হল অস্ত্রোপচার। তাই ১৫-২০ দিন শ্যুটিং থেকে বিরত ছিলেন। সম্পূর্ণ সুস্থ হলে, তবেই তিনি অভিনয়ে ফিরতে পারবেন এমনটাই ছিল নির্দেশিকা।
এদিকে ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্র তিনি। মুখ্য চরিত্র যদি না থাকে তাহলে কি করে এগোবে ধারাবাহিকটি। অন্যদিকে টিআরপিও কম ছিল। আর তাই, ধারাবাহিকের নির্মাতারা, ধারাবাহিকটি বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এ হেন কার্যকলাপ দেখে, অনুরাগীরা বেশ ক্ষুব্ধ ছিলেন। তারা চাননি, বন্ধ হোক এই ধারাবাহিক। এরপরই অনুরাগীদের একটাই প্রশ্ন, কবে তিনি ফিরবেন আবার পর্দায়?
এর উত্তর দেন তিনি। ‘ছোটপর্দায় কাজ করার মানসিকতা নেই, নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ধারাবাহিক শুরুর প্রথম কদিন চিত্রনাট্য মেনে সব হয়, পরে টিআরপির জন্য গল্পের গোরু গাছে ওঠে। এভাবে আমি কাজ করতে পারব না। আমাকে যদি ছোটো পর্দায় কাজ করতে হয়, তাহলে প্রযোজক পরিচালককে আমার শর্ত মানতে হবে। তারা যদি সহযোগিতা করেন, তাহলে আমি কাজ করব। আমার শরীর এখন অতটাও ভালো না, তাই ছোটো পর্দায় কাজ করে সময় নষ্ট করতে চায় না’।
আয় তবে সহচরী ধারাবাহিক থেকে তিনি বেরিয়ে আসতে চাইতেন। কিন্তু পারতেন না। কিভাবে বেরোবেন এটাই ভাবতেন। শ্যুটিং এ যাওয়ার আগে চোখে জল আসত। তারপর অসুস্থ হলেন। তিনি জানান, ‘ঈশ্বর আমাকে বাঁচালেন। যে ডাক্তার অস্ত্রোপচার করেছিলেন, তিনি আমার কাছে হাতজোড় করে বলেন, ক্ষমা করবেন, আমার জন্য কাজ হাতছাড়া হয়ে গেল। কিন্তু আমি তাদের জানিয়ে ছিলাম আপনাদের সহযোগীতাতেই আমার খুব বড় উপকার হয়েছে। রোজ ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজে যেতে হত’।