বয়স ৮১, এতো শুধু একটা সংখ্যা মাত্র। বয়স তাঁর জীবনে কোনো প্রভাবই ফেলেনি, বরং শক্তি জুগিয়েছে। সেই ১৯৫৮ সাল থেকে আজ পর্যন্ত নানান স্বাদের চরিত্র উপহার দিয়েছেন দর্শকদের। তাঁর সুমধুর কন্ঠ, মায়াময়ী কথা সকলকেই আবেগপ্রবণ করে তুলেছে। কখনও নায়িকা, কখনও পার্শ্ব চরিত্র, আবার কখনো মমতাময়ী মা, কিংবা রক্ষণশীল শাশুড়ি, আবার কখনও ঠাম্মি এত গুলো চরিত্র তাঁর দখলে। যৌবন থেকে বার্ধক্য সব স্তরেই অভিনয় করেছেন যিনি তিনি হলেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী লিলি চক্রবর্তী (Lily Chakravarty)।
সেই সত্যজিৎ রায় (Satyajit Ray) থেকে শুরু করে তপন সিংহ (Tapan Sinha), তরুণ মজুমদার (Tarun Majumdar), গুলজার, হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায় সহ বর্তমানের সমস্ত পরিচালকদের সাথে কাজ করেছেন। কাজ করেছেন উত্তম কুমার (Uttam Kumar), সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (Soumitra Chatterjee), বিনোদ খান্না, অমিতাভ বচ্চন সহ অনেক বড় মাপের অভিনেতা দের সাথে।
দেশভাগের পর বাবা মায়ের সাথে কলকাতায় এসে মানিকতলার ভাড়া বাড়িতে ওঠেন। কিন্তু খাবে কি? অর্থাভাবের তাড়নায় অভিনেত্রীর মা দীপালি চক্রবর্তী যোগ দিলেন থিয়েটারে। অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নান্দীকার’–এর প্রধান অভিনেত্রী হয়ে উঠলেন। অভাবের তাড়নায় মেজ দিও হয়ে উঠলেন পেশাদার অভিনেত্রী। এই পথটাই অনুসরণ করলেন লিলি চক্রবর্তী।
১৯৫৮ সালে পরিচালক কণক মুখোপাধ্যায়ের ‘ভানু পেল লটারি’ ছবিতে ছোট্ট একটি রোলের মাধ্যমেই শুরু হয় অভিনয় যাত্রা। তারপর একে একে ‘দেয়া নেয়া’, ‘দেবদাস’, ‘শাখা প্রশাখা’, ‘পোস্ত’, ‘সাঁঝবাতি’ সহ আরও অনেক সিনেমায়। শুধু বড় পর্দা নয়, অভিনয় করেছেন ছোটো পর্দায়, ‘ভুতু’, ‘দ্বিরাগমন’, ‘রেশম ঝাঁপি ‘ সহ আরও অনেক ধারাবাহিকে, তাঁর শেষ ধারাবাহিক, ‘আমার ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম’ ধারাবাহিকে।
এই ধারাবাহিকের পর প্রায় ১ থেকে দু বছর পর আবার ফিরলেন পর্দায়। জি বাংলার নতুন ধারাবাহিক ‘নিম ফুলের মধু’ (Neem Phuler Modhu) তে। নায়কের ঠাকুমার ভূমিকায় অভিনয় করছেন লিলি চক্রবর্তী। এই ধারাবাহিকে মুখ্য চরিত্রে থাকছেন রুবেল দাস ও পল্লবী শর্মা। কবে থেকে শুরু হবে, তা এখনও জানা যায়নি।