সিনেমা দেখতে ভালোবাসেনা এমন মানুষ খুবই কম পাওয়া যায়। ছোট থেকে বড়ো সিনেমা প্রেমী সকলেই। কেউ বাংলা সিনেমা (Bengali Film) দেখতে বেশি ভালোবাসেন, অর্থাৎ টলিউডকে (Tollywood) পছন্দ করেন। আবার কেউ হিন্দি অর্থাৎ বলিউড (Bollywood) তো আবার কেউ ইংরেজি অর্থাৎ হলিউড (Hollywood)সিনেমা দেখতে বেশি আগ্রহী হন। সিনেমায় কেউ গল্প দেখতে ভালোবাসেন, কেউ কেউ অ্যাকশন, কেউ কমেডি, কেউ ট্রাডেজি, আবার কেউ দেখতে ভালোবাসেন ভরপুর রোম্যান্স।
কেবল অভিনেতা-অভিনেত্রীদের দেখতেও অনেকে সিনেমার পর্দায় চোখ রাখেন। সিনেমা বিনোদনের শ্রেষ্ঠ উপায়। সিনেমার অভিনেতা-অভিনেত্রীরা সর্বদা চর্চায় থাকেন তাদের ছোট থেকে সব বিষয় নিয়েও। তাদের কোনো ছোট ঘটনায় যেন আড়াল হয় না ক্যামেরা থেকে। তাদের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না সবটাই ক্যামেরায় বন্দি হয়ে যায়। আজ এমন কিছু অভিনেত্রীর কথা জানবেন যারা অভিনয় জীবনের শুভারম্ভ করেছিলেন বাংলা সিনেমায় (Bengali Film) অর্থাৎ টলিউডের (Tollywood) হাত ধরে। আর পরবর্তীতে বলিউডে (Bollywood) জমিয়ে কাজ করছেন।
বাংলা সিনেমার হাত ধরে অভিনয় জীবনের শুভারম্ভ করেছিলেন :
রাখি গুলজার (Rakhee Gulzar)
এই অভিনেত্রীর জন্ম ১৫ ই অগাস্ট ১৯৪৭ সালে। অভিনেত্রী প্রথম অভিনয় জীবনে পা রাখেন ১৯৬৭ সালে এক বাংলা চলচ্চিত্র ‘বধূ বরণ (Bodhu Boron)’ এর মধ্যে দিয়ে। মাত্র ২০ বছর বয়সে অভিনেত্রী সিনেমা জগতে প্রবেশ করেছিলেন। বাংলা সিনেমায় প্রথম অভিনয়ের পর এই অভিনেত্রী বাংলা ও হিন্দি মূলত বেশিরভাগ হিন্দি ছবিতেই একাধিক কাজ করেছেন।
শর্মিলা ঠাকুর (Sharmila Tagore)
ভারতীয় চলচ্চিত্রের একজন সফল অভিনেত্রী হলেন শর্মিলা ঠাকুর। ১৯৪৪ সালের ৮ ই ডিসেম্বর ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্যে এই অভিনেত্রীর জন্ম হয়। তার অভিনয় জীবনের পথ চলা শুরু হয় বাংলার যুগান্তকারী পরিচারক সত্যজিৎ রায় এর সিনেমার মধ্যে দিয়ে। অভিনেত্রী সত্যজিৎ রায় পরিচালিত ‘আপুর সংসার (Apur Sansar)’ সিনেমায় প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন। তারপর তিনি বাংলা হিন্দি উভয় ইন্ডাষ্ট্রিতেই সমানতালে কাজ করে গেছেন।
বিদ্যা বালান (Vidya Balan)
এই অভিনেত্রীকে আমরা মূলত বলিউডের একজন সেরা অভিনেত্রী বলেই চিনি। তবে এই অভিনেত্রীর যাত্রাও শুরু হয়েছিল বাংলা সিনেমার হাত ধরেই। অভিনয় জগতে প্রবেশের হাজারো চেষ্টা যখন একের পর এক ব্যর্থ হতে থাকে তখন অভিনেত্রী ২০০৩ সালে পরিচালক গৌতম হালদারের একটি সিনেমায় সুযোগ পান ‘ভালো থেকো (Bhalo Theko)’ ছবিতে। তারপর থেকে অভিনেত্রী একের পর এক হিন্দি ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান।
রানি মুখার্জী (Rani Mukerji)
এই অভিনেত্রীকেও আমরা বাংলা ও হিন্দি উভয় ক্ষেত্রেই পর্দায় অভিনয় করতে দেখেছি। এই অভিনেত্রী সমানতালে বাংলা ও হিন্দি সিনেমায় নিজের অভিনয় দিয়ে দর্শকের মন জিতে নিয়েছেন। এই অভিনেত্রীর বাবা ছিলেন একজন জনপ্রিয় পরিচালক। কিন্তু অভিনেত্রীর অভিনয়ের প্রতি ছিল না কোনো আগ্রহই। কিন্তু তার প্রথম অভিনয় ১৯৯৬ সালে নিজের বাবারই পরিচালিত বাংলা সিনেমা ‘বিয়ের ফুল (Biyer Phool)’ এ। এই সিনেমায় অভিনয়ের পর অভিনেত্রীর মায়ের অনুরোধে তিনি আরো একটি হিন্দি সিনেমায় অভিনয়ে রাজি হন ও ধীরে ধীরে একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী হয়ে ওঠেন।
সোহা আলী খান (Soha Ali Khan)
৮০-৯০ দশকের ইন্ডাস্ট্রির সেরা অভিনেত্রী শর্মিলা ঠাকুরের মেয়ে সোহা আলী খান। এই অভিনেত্রীও তার মায়ের মতো নিজের অভিনয় জীবন শুরু করেন বাংলা চলচ্চিত্রের হাত ধরেই। ২০০৪ সালে পরিচালক অঞ্জন দাসের সিনেমা ‘ইতি শ্রীকান্ত (Iti Srikanta)’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্যে দিয়ে অভিনয় জগতে প্রবেশ করেন ও পরবর্তী সময়ে একের পর এক হিন্দি সিনেমায় অভিনয় করে খ্যাতি অর্জন করেন।
রাধিকা আপ্তে (Radhika Apte)
হিন্দি সিনেমার একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাধিকা আপ্তে। এই অভিনেত্রী শুধু হিন্দি সিনেমাটি অভিনয় করেননি, হিন্দি ছাড়াও বাংলা, মারাঠি, তেলুগু, তামিল ভাষার সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন। তবে এই অভিনেত্রীরও পথ চলা শুরু হয়েছিল বাংলা সিনেমার হাত ধরেই। ২০০৯ সালে পরিচালক সুজয় ঘোষের ছবি ‘অন্তহীন (Antaheen)’ সিনেমায় অভিনয়ের সুযোগ পান তারপর বলিউডে একের পর এক চলচ্চিত্রে অভিনয়ে সুযোগ পান তিনি।
কঙ্কনা সেন শর্মা (Konkona Sen Sharma)
১৯৮৩ সালে শিশু শিল্পী হিসাবে পরিচালক দীনেন গুপ্তর সিনেমা ‘ইন্দিরা’র মধ্যে দিয়ে সিনেমায় প্রবেশ করেন এই অভিনেত্রী। অভিনেত্রী বাংলার জনপ্রিয় নায়িকা অপর্ণা সেনের মেয়ে। বাংলা সিনেমায় তিনি আরও অনেক কাজ করেছেন। পাশাপাশি হিন্দি ও ইংরেজি সিনেমাতেও তিনি অভিনয় করে দর্শকের ভালোবাসা অর্জন করেছেন।