করোনা অতিমারীর জেরে সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থান থেকে জীবনযাত্রা সবটাই ব্যাহত হয়েছে। বিশেষত ক্ষতি হয়েছে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার। শিক্ষা ব্যবস্থা একপ্রকার মুখ থুবড়ে পড়েছে। বিগত ২ বছর শিক্ষার্থীরা ভুলতে বসেছিল তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কথা। পাঠ্য বই নয় বরং অনলাইন ক্লাসের ঠেলায় মুঠোফোনই হয়ে উঠেছিল তাদের সঙ্গী। ক্লাসে বসে হৈ হুল্লোড় পড়াশুনা সবই যেন অতীত হতে শুরু করেছিল। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছিল পড়ুয়াদের জন্য। তবে গরমের ছুটিতে (Summer Vacation) আবারও বন্ধ স্কুল।
এবারে উপস্থিত হল অসহ্যকর গরম। গরমে যাতে পড়ুয়ারা অসুস্থ না হয়ে পরে তাই প্রতি বারের মতো এবারেও গরমের ছুটি (Summer Vacation) ঘোষণা করা হলো রাজ্যের তরফে। তবে একটানা ৪৫ দিন ছুটির পরেও খুললনা স্কুল। গরমের ছুটি আরও ১১ দিন বেড়ে গেল। গরমের ছুটিতে সরকারের তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল যে মিড্ ডে মিল এর সামগ্রী প্রদান চালু থাকবে। কিন্তু দারিদ্রের ঘরে সেটা বড়োই স্বল্প। বিশেষত লোকডাউন এর সময় থেকে তাদের জীবনযাত্রা আরও যেন কঠিন হয়ে উঠেছে।
স্কুল পড়ুয়ারা লেবারের কাজে (School Students work as Labour)
তাই সংসারের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এসেছে সংসারের দায়িত্ববান খুদেরা। সেই কিশোররা যারা পড়াশুনার ফাঁকে বাবা মায়ের দায়িত্ব কম করতে হাত লাগিয়েছে কাজে। রোজগার করতে হচ্ছে তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়াতে। এইরকম চিত্র আমরা আশেপাশে প্রায়ই দেখে থাকি। গরমের স্কুল ছুটির জন্য এই দৃশ্য আবার নতুন করে ধরা দিলো। পুরুলিয়ায় এমন দৃশ্য বর্তমানে খুব সাধারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্কুল পড়ুয়াদের (School Students) ঠিকানা হয়েছে বিভিন্ন গ্যারেজ ও দোকান।
সেই ছাত্রদের তারা কেন কাজ করছে এমন প্রশ্ন করলে, তাদের বেশিরভাগের উত্তর ছিল বাবা-মা কে সাহায্য করা। স্কুল দীর্ঘদিন ছুটি থাকায় বাড়িতেই থাকছে তারা। বাড়ির পরিস্থিতি সচ্ছল নয়। তাদের কারুর বাবার চায়ের দোকান, কেউ ডেকোরেটার্স এর কাজ করেন তো কারুর আবার ছৌ নাচ করেই সংসার চলে। ওই কর্মরত পড়ুয়ারা দশম বা একাদশ শ্রেণীতে পরে। তারা জানায় গ্যারেজে বা দোকানে কাজ করে তারা কিছু উপার্জন করে বাড়িতে সাহায্যও করতে পারছে। আবার কাজও শিখে নিয়েছে অনেকটাই। তবে তারা সকলেই জানিয়েছে স্কুল খুললে তারা অবশ্যই আবার স্কুলে যাবে।