আমাদের চারপাশে এমন অনেক জীব বৈচিত্র (Biological Diversity) আমরা দেখতে পাই যে চাইলেও তার অস্বিত্ব আমরা অস্বীকার করতে পারিনা। কিছু জীব কিছু উদ্ভিদ পৃথিবীর বুকে লক্ষ লক্ষ বছর ধরে বসবাস করছে যাদের দেখে আপনি আশ্চর্য হতে বাধ্য। যাদের অনেকের শারীরিক বৈচিত্রের ব্যাখ্যা এখনও অধরা অজানা। তবে এই বিশ্বে প্রায় প্রতিনিয়ত প্রতিক্ষনে এমন কিছু আমাদের সামনে আসে যা আমাদের জানার ইচ্ছাকে আরো প্রবল করে তোলে। অদ্ভুত জীব বৈচিত্র সর্বদা এটা প্রমান করে পৃথিবীতে জানার কোনো শেষ নেই।
বিচিত্র জীব বৈচিত্র (Biological Diversity) এটা প্রমান করে যে আমাদের জানাটাই শেষ নয়। জানার আরও অনেক কিছু বাকি আছে। পরিবর্তন পরিবেশের নিয়ম কিন্তু এই সাথে সাথে যে জীব বা উদ্ভিদরা খাপ খাইয়ে নিতে পারেনা তারা ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে অগ্রসর হয়। কিন্তু তারই মাঝে আমাদের পরিবেশে এমন অনেক জীবের অস্তিত্ব উজ্জ্বল হয়ে আছে যারা যুগ যুগ ধরে পরিবেশের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে বেঁচে আছে।
বিশ্বের অবাক করা কিছু জীব (World wired animals)
লিপস্টিক পড়া মাছ (Red Lip Fish)
সত্যিই আশ্চর্যের বিষয় তাই না ? মাছ আবার লিপস্টিক পরে নাকি ? কিন্তু এটা মিথ্যে নয়। আসলেই পৃথিবীতে এমন এক মাছের অস্তিত্ব রয়েছে। মাছটির নাম ‘ব্যাটফিশ’ (Batfish) এই মাছের ঠোঁট টকটকে লাল। দেখলে মনে হবে লিপস্টিক পরে আছে। হ্যাঁ এই মাছ আপনার আমার মতো বাজার থেকে কেনা প্রসাধনী ব্যবহার করেনা। এই মাছটি মহাসাগরের গ্যালাপ্যাগোস দ্বীপপুঞ্জে পাওয়া যায়। এই মাছ সাঁতার কাটতে পারে না। জলের নিচেই থেকে হাঁটাচলা করে। এই মাছের এখনো পর্যন্ত প্রায় ৬০ টি প্রজাতির খোঁজ পাওয়া গেছে। আর প্রায় ১০ বছরেরও বেশি এই মাছ বেঁচে থাকতে পারে।
হাঁটতে পারা মাছ (walking Fish)
এই মাছের সত্যিই পা আছে। এই মাছ জলে ডাঙায় উভয় জায়গাতেই বেঁচে থাকতে পারে। আসলে এটি একটি উভচর প্রাণীর প্রজাতি। বর্তমানে এই মাছটি বিলুপ্তির পথে। বিশেষত হ্রদে এই মাছের বসবাস। এটি মেক্সিকোয় দেখতে পাওয়া যায়। মেক্সিকোয় একে ওয়াকিং ফিশ (Walking Fish) বলে নামাঙ্কিত করা হয় তবে একে ‘অ্যাক্সোলোটাল’ (Axolotl) বলে। ড্রাগনের মতো দেখতে এই প্রাণী আপনাকে আশ্চর্য করতে বাধ্য।
পান্ডা পিঁপড়ে (Panda Ants)
এই পিঁপড়ের নাম পান্ডা এন্ট হলেও পিঁপড়েটির চেহারা পান্ডার মতো মোটেও নয়। কিন্তু পিঁপড়েটি দেখতে অবশ্যই পান্ডার মতো। পান্ডার গায়ে যেমন সাদা কালো লোমে ঢাকা থাকে। এই পিঁপড়ের গায়েও সেরকমই সাদাকালো ছোট্ট ছোট্ট লোমে ঢাকা। এই পিঁপড়ের কামড়ের যন্ত্রনা একটা গরুকে মেরে ফেলতে সক্ষম। এটি বোলতার একপ্রকার প্রজাতি। এটি চিলির স্ক্লেরোফিল বনে পাওয়া যায়। এটি পান্ডা এন্ট নাম পরিচিত হলেও এর নাম হল ‘ইউস্পিনোলিয়া মিলিটারিস’ (Euspinolia militaris)।
নীল ড্রাগন (Blue Dragon)
ড্রাগনের অস্তিত্ব এখনো টিকে রয়েছে বিশ্বে। আটলান্টিক মহাসাগরে এমনই এক প্রজাতির দেখা মেলে। এটি ভীষণ বিচিত্র একটি জীব। খুব বিষাক্ত। এই দেহে চারটি ভিন্ন প্রজাতির মিশ্র বৈচিত্র দেখা যায়। এটি বিষাক্ত জলজ একটি প্রজাতি যা আটলান্টিক মহাসাগরে পাওয়া যায় পর্তুগিজ ম্যান ও-ওয়ার শিকারের জন্য বেশি পরিচিত। এই ব্লু ড্রাগন বা ‘গ্লুকাস আটলান্টিকাস’ (Glaucus atlanticus) বিষাক্ত শিকার ধরে তার বিষ নিজের শরীরে সঞ্চয় করে রাখতে সক্ষম।
আরও পড়ুনঃ নীল কাঁকড়াবিছে! যার বিষের মূল্য শঙ্খচূড় সাপের বিষের দ্বিগুনেরও অধিক
কাঁচের ব্যাঙ (Glass Frog)
এই ব্যাঙের দেহ একদম স্বচ্ছ। দেখে মনে হবে তার শরীরে কোনো চামড়ার পরদ নয় বরং কাঁচের পরদ রয়েছে। মূলত সবুজ রঙের চামড়া হলেও কিছু ক্ষেত্রে এতটাই স্বচ্ছ থাকে দেহের নিচে ভাগের চামড়া যে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পরিষ্কার বোঝা যায় উপর থেকেই। এই ব্যাঙের বেশিরভাগ প্রজাতি মধ্য আমেরিকায় পাওয়া যায়। এই ব্যাঙ বেশিরভাগ সময়ই গাছে বসবাস করে।