দুই হাত ছাড়াই ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে গড়ে তুলছেন! রইল পূর্ব বর্ধমানের জগন্নাথের ইচ্ছাশক্তির কাহিনী

ঠুঁটো জগন্নাথ। এমন একটা প্রচলিত কথার সাথে আমরা কম বেশি সকলের প্রায় পরিচিত। কারুর হাত না থাকলে বা হাত থাকতেও যে কোনো কাজ না করতে

Desk

bardhaman primary school teacher jagannath bauri story

ঠুঁটো জগন্নাথ। এমন একটা প্রচলিত কথার সাথে আমরা কম বেশি সকলের প্রায় পরিচিত। কারুর হাত না থাকলে বা হাত থাকতেও যে কোনো কাজ না করতে চাইলে সচরাচর তাদের আমরা এমন কথা বলে থাকি বা বলতে শুনে থাকি। তবে ইচ্ছে  থাকলেই যে উপায় হয় এই কথাটা অনেকে অনেকবার অনেকরকম ভাবে প্রমান করেছেন বারংবার। এবারে একথা প্রমান করলেন বর্ধমানের জগন্নাথ বাউড়ি (Jagannath Bauri)।

পরিস্থিতির পরিহাসে মানুষের কোনো অঙ্গ নাই থাকতে পারে। কিন্তু সে যদি চায় তবে সে সব অসাধ্য সাধন করতে পারবে। এমনি এক মানুষের অদম্য ইচ্ছাশক্তি পূর্ব বর্ধমানের মানুষজনকে আশ্চর্য করেছে। পূর্ব বর্ধমানের বেলুটি গ্রামে থাকেন তিনি। নাম জগন্নাথ বাউড়ি (Jagannath Bauri)। তিনি বর্তমানে জয়কৃষ্ণপুরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।

bardhaman primary school teacher jagannath bauri story

জগন্নাথ বাউড়ির অদম্য ইচ্ছাশক্তি তাকে আজ এই স্থানে পৌঁছে দিয়েছে। জন্ম থেকেই দুই হাত ছিল না জগন্নাথের। তবুও পড়াশুনায় বাধা পড়েনি তার। হাতের বদলে পা দিয়ে লেখা শেখেন তিনি। আর ধীরে ধীরে নিজেকে দক্ষ গড়ে তোলেন। জগন্নাথ বাউড়ির শিক্ষক ভূতনাথ পাল তাকে এই বিষয়ে সহায়তা করেছিলেন।

জগন্নাথ একজন দরিদ্র পরিবারের ছেলে। তার বাবা জনমজুরের কাজ করতেন। তার মা সুমিত্রাদেবী, আর স্ত্রী লক্ষী ও দুই সন্তান ঋত্বিকা ও অষ্টম। ছোট থেকেই শিক্ষায় যাতে তাকে পিছিয়ে না পড়তে হয় তাই হাতের বদলে পায়ে করে পেন-পেন্সিল ধরার অভ্যাস করে নেন তিনি। আর এভাবেই মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের গন্ডি পেরিয়ে ২০১০ সালে চাকরি পান।

প্রথম প্রথম জগন্নাথ হাত না থাকা সত্ত্বেও কিভাবে পড়াতে পারবেন সে বিষয়ে পড়ুয়াদের পরিবার সন্দেহ প্রকাশ করেছিল। কিন্তু পরে যখন তারা জগন্নাথের পা দিয়েই পড়ানোর কৌশল দেখেন সকলে মুগ্ধ হন। আর নিজেদের মনের সমস্ত সংশয় দূর করে ফেলেন। জগন্নাথের সহশিক্ষকরাও জানান যে, জগন্নাথ বাকিদের থেকে কোনো অংশে কম নন। তিনি যথেষ্ট দক্ষ শিক্ষক।

× close ad