পথ ও প্রাসাদ, শত্রু, মঙ্গলদীপ, গুরুদক্ষিণা, সজনী গো সজনী, এইসব বিখ্যাত বিখ্যাত সিনেমায় যিনি শিশু চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, মনে পড়ে তাঁর কথা? এই শিশু অভিনেতা এখন অনেক বড় হয়েছেন, কিন্তু তাঁকে আর বড় পর্দায় দেখা যায়নি। বড় পর্দায় দেখা যায়নি বললে ভুল হবে, লিড চরিত্রে দেখা যায়নি। দেখা গেছে পার্শ্বচরিত্রে। কিন্তু তাঁর সময়েরই একজন শিশু অভিনেতা হয়ে তিনি আজ হিরো। কিন্তু সে আর হিরো হতে পারেননি।
ভাবছেন সে টা কে? সে হল কিছু কিংবদন্তি সিনেমায় যিনি শিশু চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন, অর্থাৎ মাস্টার রিন্টু (Master Rintu)। তাঁকে দর্শকরা এই নামেই চেনেন। তাঁর আসল নাম সজল দে (Sajal Dey)। তাঁর চরিত্রের অভিনয় কখনও আমাদের কাঁদিয়েছে, কখনও হাসিয়েছে। ১৯৯৫ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত তাঁকে শিশু অভিনেতা হিসেবে দেখা গেছে। কখনও সে প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জির ছেলেবেলা, কখনও আবার তাপস পালের ভাইপো।
কিন্তু সেই অভিনেতা বড় হওয়ার পর তাঁকে আর কোথাও দেখা যায়নি। কিন্তু তাঁরই সমসাময়িক শিশু অভিনেতা সোহম চক্রবর্তী (Soham Chakraborty) আজ টলিউডের একজন জনপ্রিয় অভিনেতা। কিন্তু মাস্টার রিন্টু! সে কোথায়? আসুন জেনে নিই তাঁর সম্পর্কে।
মাস্টার রিন্টু প্রথম যে ছবিতে অভিনয় করেন সেটা হল, ‘তুমি কত সুন্দর’। কিন্তু এই ছবিটি তাঁর প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি নয়, তাঁর প্রথম মুক্তি প্রাপ্ত ছবি ‘গুরুদক্ষিণা’। তারপর একে একে ৩০০ টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। কিন্তু তারপরও তাঁকে দেখা যায়নি। টলিউড তাঁর খোঁজ নেয়নি। এমনকি নায়কের পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করার জন্যও ডিরেক্টররা তাঁকে নিতে ভয় পেত, যদি সে নায়কের থেকে ভালো অভিনয় করে ফেলে।
করোনার সময় তাঁর সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছিল। খাবারের সামগ্রী জোগাড় করা তাঁর পক্ষে কঠিন হয়ে পড়েছিল। কারণ তাঁর কাছে অভিনয়ের সেরকম সুযোগ আসছিল না। তাই বাধ্য হয়ে তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করতে শুরু করলেন। তাই অভিনয়ে অতটা সময় দিতে পারেন না। কিন্তু তিনি এখন অভিনয়ের মধ্যেই আছেন। তবে চরিত্রের ব্যাপারে তিনি খুব চুজি।
তবে তিনি আর পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করতে চাননা, তাই তাঁকে আর সেরকমভাবে দেখা যাচ্ছেনা। তবে তাঁর ইচ্ছা আছে, একটা অভিনয়ের স্কুল খোলার। তবে তাঁর আক্ষেপ রয়েছে, তিনি কখনও বঙ্গবিভূষণ, মহানায়ক এসব পুরস্কার পাননি। তিনি যা পুরস্কার পেয়েছেন সবটাই দর্শকদের কাছে থেকে। তাঁর ছবি দেখে দর্শকরা তাঁকে যেগুলো উপহার দিয়েছেন, সেগুলো তাঁর ঘরে সাজিয়ে রেখেছেন।