আমরা ভাবি ইন্ডাস্ট্রি জগত একটা ঝা চকচকে জগত, তাই এই জগতে যারা আসেন, তাদের জীবনের সবকিছুই ঝা চকচকে। ইন্ডাস্ট্রির মত তাদেরও জীবন রঙিন। কিন্তু আসলে তা নয়, অনেক অভিনেতা অভিনেত্রী রয়েছেন, যাদের জীবনটা কাঁটা বিছানো পথ। যে পথে হাঁটতে গেলে রয়েছে অনেক কষ্ট। সেই কষ্টের কথা শুনলে চোখে জল আসবে।
এইরকমই এক অভিনেত্রী হলেন, সোহিনী সান্যাল (Sohini Sanyal)। যাকে বর্তমানে দেখা যাচ্ছে, গাঁটছড়া ধারাবাহিকে। কুণালের মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করছেন। ঝা চকচকে দুনিয়ায় তাঁর ওঠা নামা। কিন্তু তার ব্যক্তিগত জীবনটা কি আদৌও মসৃণ? আসলে অভিনেতা অভিনেত্রীরা তাদের চরিত্রের মধ্যে দিয়ে পর্দায় পরিচিত হয়ে ওঠেন। তাই তাদের ব্যক্তিগত চরিত্র বা ব্যক্তিগত জীবনটা তারা না মেলে ধরলে দর্শকের পক্ষে আন্দাজ করাও ভীষণ কঠিন।
প্রায় ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে রয়েছেন ইন্ডাস্ট্রি জগতে। নায়িকার চরিত্রে কখনও দেখা যায়নি। তবে নায়িকা বাদে যে চরিত্রে দেখা গেছে, তিনি তাতেই হয়েছেন জনপ্রিয়। মায়ের চরিত্র হোক কিংবা পিসি সবেতেই তিনি বিপুল পরিমাণে ভালোবাসা পেয়েছেন সকলের কাছে। তাঁকে দেখলে মনে হয় খুব হাসি-খুশি স্বভাবের একজন মানুষ। কিন্তু এই সরলতার পিছনে রয়েছে, বুক ভরা কান্না আর যন্ত্রণা।
সেই যন্ত্রণাদায়ক জীবনকে এগিয়ে নিয়েই তিনি চলেছেন বাঁচার লড়াইয়ে। তাঁর বাবার ইচ্ছা ছিল মেয়ে ডাক্তার হোক। কিন্তু ভাগ্য সহায়তা করেনি। আর্থিক অনটনের জন্য তাঁকে কলেজ ছেড়ে মডেলিং এর জগতে প্রবেশ করতে হয়। পাশাপাশি নাচের স্কুলও চালাতেন। এইভাবে আর্থিক দিকটা সামলাতেন। এমন সময় গেছে বাস ভাড়ার টাকা নেই পায়ে হেঁটে রাস্তা চলেছেন।
১৫ টা বছর অভিনেত্রী কাজ করেছেন ইন্ডাস্ট্রি জগতে। কোনোদিন তিনি কোনো ছুটি নেননি। সারা বছর কাজ করে গেছেন। তাঁর মা অসুস্থ। তাই মায়ের জন্য প্রতিমাসে ৯৬ হাজার টাকা করে খরচ হত। তাই সেই টাকা জোগাড়ের জন্য কোনো ব্রেক না নিয়ে কাজ করেছেন। কিন্তু এত লড়াইয়ের পরও সাধারণ দেয়নি ভাগ্য। মাকে তিনি আর বাঁচাতে পারলেন না।
এখন তার অবলম্বন তাঁর স্বামী আর তাঁর পোষ্য। এই নিয়েই তিনি জীবন যাপন করছেন। তিনি জানিয়েছেন তিনিও হয়েছিলেন নেপোটিজমের শিকার। টলিউডে অসুবিধা হয়েছিল কাজ পেতে। কিন্তু সেইসব কিছুকে তোয়াক্কা করে, আজ তিনি সফল একজন অভিনেত্রী। নিজের যোগ্যতা দিয়ে তিনি আজ এই জায়গায়।