বাংলা ধারাবাহিকের (Bengali Serial) বেশ কিছু অভিন্নতা লক্ষ্য করা যায়। যেমন গ্রামের মেয়ে শহরের ছেলে, শহুরে ছেলের গার্লফ্রেন্ড থাকবে, যার সাথে তাঁর বিয়ে হওয়ার কথা ছিল কিন্তু হয়নি, নায়কের পরিবারের এমন অনেক সদস্য থাকবে, যে নায়িকাকে মেনে নেবেনা, তারপর আরও একটা জিনিস লক্ষ্য করা যায়, নায়কের পরিবারের সবাই ব্যবসায়ী। তাদের নিজস্ব ফার্ম আছে।
স্টার জলসা থেকে জি বাংলা সবেতেই এই জিনিস লক্ষ্য করা যায়। এই যেমন গাঁটছড়া (Gaatchora) ধারাবাহিকে দেখা যায়, সিংহ রায় পরিবারের গয়নার ব্যবসা, হরগোরী পাইস হোটেল ধারাবাহিকেও রয়েছে ব্যবসা, পাইস হোটেলের ব্যবসা। খেলনা বাড়ি ধারাবাহিকে পুতুলের ব্যবসা। মিঠাই (Mithai) ধারাবাহিকে মিষ্টির ব্যবসা। লক্ষী কাকিমা সুপারস্টার ধারাবাহিকে মুদিখানার ব্যবসা, উড়ন তুবড়িতেও রয়েছে ব্যবসা।
সব ধারাবাহিকেই রয়েছে পারিবারিক ব্যবসা। দর্শকদের প্রশ্ন কেন ধারাবাহিকে ব্যবসা দেখানো হয়? পুলিশ, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার খুব কম ধারাবাহিকে দেখা যায়। এখন শুধুই ব্যবসা। বাঙালিরা যে সব পারে, সেটাই কি বোঝাতে চাইছেন নির্মাতারা? আগেকার দিনে কিন্তু চাকরি বাকরির থেকে সবাই ব্যবসায় করত।
বাংলা সাহিত্যে এই ব্যবসার নিদর্শন গুলো পেয়ে থাকি। বংশীদাসের মনসামঙ্গলে ও কবিকঙ্কণ মুকুন্দরামের চণ্ডীমঙ্গলকাব্যে পান ও নারিকেলের ব্যবসা লক্ষ্য করা যায়। ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানির সময়েও দেখি সেই ব্যবসা বাণিজ্য। আর একটা জিনিসও আমরা শুনতাম, রাজা গেছেন বাণিজ্য করতে। এখন চাকরির ভিড়ে ব্যবসার স্থিতি যেন হারিয়ে গেছে কোথায়।
তাই তো, সেই হারিয়ে যাওয়া জিনিসটাকে পুনরায় ফিরিয়ে আনছে ধারাবাহিক। তবে এ কথাও সত্য যে, আগে বাঙালিরা ব্যবসা করত, কিন্তু আমরা বাস্তবে এখন যেসব বড় বড় বিজনেস ম্যানদের দেখেছি তারা কেউ বাঙালি নন, সবাই বেশিরভাগ মারোয়ারি। কেউ আগরওয়াল বা কেউ গুপ্তা, বাঙালি ব্যবসায়ী খুব কম। তাই বলা যায়, বাংলা ধারাবাহিকে ব্যবসা জিনিসটাকে প্রাধান্য দিয়ে সকলকে ধারাবাহিক নির্মাতারা দেখাচ্ছেন, বাঙালিরাও পারে সফল ব্যবসায়ী হয়ে উঠতে।