শুধু ভারত নয় গোটা বিশ্বের জনপ্রিয় গায়িকা হলেন, শ্রেয়া ঘোষাল (Shreya Ghoshal)। তাঁর গানে মোহিত গোটা মানুষ। হিন্দি গান ছাড়াও তিনি গেয়েছেন, বাংলা, নেপালি, তামিল, ভোজপুরি, তেলুগু, ওড়িয়া, গুজরাতি, মালয়ালম, মারাঠি, কন্নড়, পাঞ্জাবি ও অসমীয়া প্রভৃতি ভাষায় গান গেয়েছেন। তাঁর কন্ঠ আজও মানুষের মনে আগের মতোই একই রকম উদ্দীপনা জাগায়। এই জনপ্রিয়তা তাঁর নিজের কঠোর পরিশ্রমের ফল।
মাত্র চার বছর বয়সে সঙ্গীতের তালিম নেওয়া শুরু করেন। তারপর ছয় বছর বয়সে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শেখেন। অর্থাৎ ছোটো থেকেই সঙ্গীতই ছিল তাঁর প্রাণ। জন্ম পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে হলেও, তাঁর বেড়ে ওঠা রাজস্থানে। তাই তাঁর রাজস্থানের সঙ্গীতের প্রতি একটা টান ছিল। তারপর এল তাঁর জীবনে সেই সন্ধিক্ষণ।
যা আজ তাঁকে এত সাফল্য দিয়েছে। সালটা ১৯৯৯ জি টিভি-র রিয়ালিটি শো ‘সারেগামা’তে অংশগ্রহণ করেন শ্রেয়া। তখন বয়স ছিল মাত্র ১৬। তাঁর সুরের জাদুতে সবাই মুগ্ধ। তখনকার যেসব বিচারকরা ছিলেন সবাই তাঁর কন্ঠ এবং গান শুনে মুগ্ধ হয়েছিলেন। এই শোয়ে সবার মধ্যে থেকে শ্রেয়া ঘোষাল বিজয়ী হন।
View this post on Instagram
আজ থেকে প্রায় ২৩ বছর আগের একটি ভিডিও ক্লিপ সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ছোট্ট শ্রেয়া সারেগামাপার মঞ্চে সেমিফাইনালে ঊষা মঙ্গেশকরের গাওয়া একটি জনপ্রিয় রাজস্থানী লোকগান গাইছেন। সেই সময় বিচারকদের আসনে স্পেশাল ভাবে উপস্থিত ছিলেন, ঊষা খান্না এবং শাবির কুমার। সেই মঞ্চে গান গেয়ে তাদের মুগ্ধ করেছিলেন শ্রেয়া ঘোষাল।
রাজস্থানী গান গাওয়ার পর, বিচারকের আসনে থাকা সোনু নিগম তাঁকে প্রশ্ন করেন, ‘ তোমার মাতৃভাষা তো বাংলা, তাহলে তুমি এত সুন্দর করে কীভাবে রাজস্থানী গান গাইলে?’ তখন শ্রেয়া জবাব দেয়, ‘ভারতের সব ভাষায় আমার প্রিয়’। আর তাঁর এই দক্ষ গানের গলা এবং বিভিন্ন ভাষার আয়ত্তকরণ দেখে চলচ্চিত্র নির্মাতা সঞ্জয় লীলা ভন্সালীর নজরে আসেন। তারপরেই তিনি সুযোগ পান তাঁর প্রথম প্লেব্যাক ২০০২ সালে দেবদাস চলচ্চিত্রে।
এরপর থেকেই তিনি সাফল্যিত এবং জনপ্রিয় হয়ে উঠলেন, একে একে শুরু করলেন, ‘বৈরি পিয়া’, ‘ঢোলা রে’, ‘মোরে পিয়া’-র মতো কালজয়ী গান। মাত্র ১৮ বছর বয়সেই জিতে নিলেন, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। আজ তিনি জনপ্রিয় গায়িকাদের একজন। তার অনুরাগীরা তার গান শোনার জন্য মুখিয়ে থাকেন। গায়িকার গলায় যেন দেবী সরস্বতীর বাস।