কোনো মানুষ কাউকে ভক্তি বা শ্রদ্ধা করলে, তার জন্য সে সবকিছু করতে পারে। এই যেমন আজীবন হয়ে আসছে, মহাদেব ভক্তরা শিবের মাথায় জল ঢালার জন্য পায়ে হেঁটে বাবার চরণে যান। কারও লাগে একদিন, কারও ২-৩ দিন। পায়ে ব্যাথা করলেও তারা হার মানেন না। মহাদেবের জন্য পায়ে ব্যাথাটাও তখন তুচ্ছ লাগে।
তবে আজ এমন ভক্তের কথা বলব, যে কিনা একজন বিখ্যাত গায়ক অরিজিৎ সিং (Arijit Singh) এর জন্য প্রায় ২০০ কিলোমিটারেরও বেশি পায়ে হেঁটে এসেছেন, শুধুমাত্র তাঁর সাথে দেখা করতে। ভাবতে পারছেন? শুধুমাত্র একজন গায়কের সাথে দেখা করবে বলে, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার মধ্যমগ্রাম থেকে হেঁটে এলেন জিয়াগঞ্জ। মধ্যমগ্রাম থেকে জিয়াগঞ্জ আসতে হাঁটা পথে সময় লাগে প্রায় ৩৯ ঘন্টা। এই ৩৯ ঘন্টা হেঁটে তিনি এলেন দেখা করতে।
জনপ্রিয় প্লেব্যাক সিঙ্গার অরিজিৎ সিং (Arijit Singh) এর ভীষণ বড়ো একজন ভক্ত তিনি। গায়কের সেই ভক্তের নাম দ্বীপ কুমার। তিনি একজন প্লাস্টিকের খেলনা বিক্রেতা। ২৬ শে জুলাই বেরিয়েছিলেন ১ আগস্ট তিনি পৌঁছেছেন। তিনি ৭ দিন ধরে পায়ে হেঁটে পৌঁছে গিয়েছেন জিয়াগঞ্জ। মহাদেব ভক্তদের হাতে যেমন বাঁক থাকে, তাঁর হাতে ছিল অরিজিৎ সিংয়ের ছবি সহ একটি প্ল্যাকার্ড। তাতে লেখা রয়েছে অরিজিৎ সিংয়ের সাথে দেখা করতে এই পদযাত্রা।
তিনি অরিজিৎ সিংকেই নিজের গুরু বলে মেনেছেন। বাড়িতে রয়েছে দরিদ্র বাবা মা। দ্বীপই একমাত্র সম্বল তাদের মুখে অন্ন জোগাবার। তাই সে ফুটপাতে খেলনা বিক্রি করে। এই দরিদ্রতার মাঝে নিজের স্বপ্ন, নিজের গুরুকে সামনে থেকে দেখার ইচ্ছা হারিয়ে যায়নি। তাই তিনি নিজের মনের জোড়ে পায়ে হেঁটে এগিয়ে গেলেন। তাঁকে এই দেখা করার জন্য সহায়তা করেছেন, জিয়াগঞ্জ থানার ওসি বিশ্বজিৎ ঘোষাল।
আরও পড়ুনঃ জন্মদিনেও কাজে ব্যস্ত স্বামী! ছবিতে শুভেচ্ছা জানালেন কোয়েল, প্রশংসায় পঞ্চমুখ নেটিজেনরা
ওসি বিশ্বজিৎ ঘোষাল বলেন, ‘সোমবার বিকেলে ওই প্লাকার্ড হাতে যুবকের সাথে আমার দেখা হয়। তাঁর প্লাকার্ডের লেখা আমায় মুগ্ধ করে। তাই আমি ওকে অরিজিৎ সিংয়ের সাথে দেখা করিয়ে দিই’।
গুরুর সাথে দেখা করার পর দ্বীপ জানান, ‘অনেক দিনের ইচ্ছা ছিল গানের জগতের ঈশ্বরের সাথে দেখা করার। এতদিন পর সেই ইচ্ছা পূরণ হল। আমার প্রিয় শিল্পীর সাথে দেখা করে আমি খুব খুশি হলাম। আমার জীবন স্বার্থক হল। অরিজিৎ এর মত শিল্পী আর এরকম মাটির মানুষ আর পাওয়া যাবে না’।