বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বন। আর পার্বন মানেই উৎসব। এই ব্যস্ত জীবনে উৎসবের ছোঁয়া পেতে কোন মানুষেরই না ভালো লাগে ? তবে এই প্রচন্ড গরমে যেন উৎসবের আনন্দও সম্পূর্ণ মাটি করে দিচ্ছে। গরমে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন চারিদিকে। গরমে পথচলতি মানুষের অসুস্থ হয়ে পড়া বা সানস্ট্রোক হয়ে যাওয়াটা খুব সাধারণ বিষয়ের মতো হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরই মাঝে শোনা গেলো পানিহাটির চিঁড়ের মেলায় (Chirer Mela) গরমে মৃত্যুর ঘটনা।
তবে এরই মাঝে গতকাল পানিহাটিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল চিঁড়ের মেলা (Chirer Mela) বা দণ্ড মেলা। পানিহাটিতে এই মেলা বিগত প্রায় ৫০০ বছর ধরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই মেলা নিজের সাথে জগ জগ ধরে বহন করে চলেছে এক ঐতিহ্যবাহী ইতিহাস ও বিশ্বাস। পানিহাটি দণ্ড মহোৎসব সম্পর্কে প্রচলিত কথা অনুযায়ী, মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্য রঘুনাথ দাস গোস্বামী নামক একজনকে দণ্ড দিয়েছিলেন ওই স্থানে। সেই থেকেই এই দণ্ড মহোৎসব যুগ যুগ ধরে চলে আসছে।
চিঁড়ের মেলায় দুর্ঘটনা (Chirer mela Accident)
রঘুনাথ দাস গোস্বামী মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্যের দর্শন হেতু মহাপ্রভুকে মিথ্যা কথা বলেছিলেন। যার শাস্তি স্বরূপ মহাপ্রভু চৈতন্য রঘুনাথ দাস গোস্বামীকে দণ্ড দেন তাকে মহাপ্রভুর সকল ভক্তবৃন্দকে দই চিঁড়ে খাওয়াতে হবে। তার সেই রঘুনাথ দাস গোস্বামীর দণ্ডকেই মহোৎসব রূপে পালন করে আসা হচ্ছে। এই মেলায় অনন্যও মানুষ ভিড় জমান প্রতি বছর। বৈষ্ণব ধর্মের মানুষরা এই মেলাকে মালসা ভোগের আকারেও পালন করে থাকেন।
বিগত দুই বৎসর যাবৎ করোনা আবহের জেরে প্রায় সর্বত্রই সকল মেলা-উৎসব বন্ধ রাখা হয়েছিল। জনসমাগম যাতে না হতে পারে সেই কারণেই সকল প্রকার মেলা সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। তবে এই বছর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক। আর তাই এই বছর আবারও বসেছিল পানিহাটির ঐতিহ্যবাহী চিঁড়ের মেলা।
আরও পড়ুনঃ রেল ইঞ্জিনের তলায় বসে যাত্রা! কিকরে সম্ভব ? রেলের মাথায় হাত, মুহূর্তে ভাইরাল খবর
কিন্তু এই বছরে গ্রীষ্মের শুরু থেকেই প্রখর রোদের তেজ বেড়েই চলেছে ক্রমাগত। বৃষ্টির দেখা নেই বললেই চলে একফোঁটা বৃষ্টির আশায় মানুষ চাতকপাখির মতো অপেক্ষা করে বসে আছে। আর এই প্রচন্ড গরমের মধ্যেই পানিহাটির ওই মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ায় খুবই দুঃখজনক ভাবে সানস্ট্রোকে মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। আর অনেক মানুষ গরমে অসুস্থও হয়ে পড়েছেন। অনেকে এই ঘটনায় ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করেছেন তো আবার অনেকে এটা একটা দুঃখজনক দুর্ঘটনা বলেই ব্যাখ্যা করেছেন।