স্টার জলসার (Star Jalsha) আরও এক সিরিয়াল শেষের পথে। এ যেন এক অনাকাঙ্খিত শেষ। খুব সম্প্রতি, জলসায় শুরু হয়েছিল ‘মেয়েবেলা’ (Meyebela) নামক একটি ধারাবাহিক। যার প্রোমো মন ছুঁয়ে গিয়েছিল দর্শকের। তবে শুধু প্রোমোই নয় প্রতিটি পর্বে দর্শক পেয়েছেন গল্পে অন্যরকম ছোঁয়া। এই ধারাবাহিকে ছিলনা গতানুগতিক কূটকচালি বা পরকীয়ার গল্প। ছিল একটা সুন্দর সম্পর্কের বেড়ে ওঠার গল্প।
বিয়ের পর একটা মেয়ের জীবনে কতটা পরিবর্তন ঘটে? নতুন সম্পর্ক গুলো কতটা জটিল বা সরল হয় সেই নিয়েই গল্প। আমাদের অন্দরমহলে যারা প্রতিনিয়ত নিজের পরিবারকে এক সুতোয় বেঁধে রাখতে তাদের আরাম দিতে সমানে পরিশ্রম করে চলেছেন তাদের মনেও যে একটা গভীর ক্ষত থাকতে পারে, অনেক না পাওয়া থাকতে পারে তা আমরা অনেকেই উপলব্ধি করতে পারিনা।
মা, শাশুড়ি,কাকিমা, জেঠিমা আরও কত সম্পর্ক। এই সম্পর্কের ঘেরাটোপের তো আমাদের বেড়ে ওঠা, সেখান থেকেই প্রাথমিক শিক্ষা। তবে একটা পরিবার যত বড় হয় সেই পরিবারে যেমন হাসিমুখে লড়াই করার ক্ষমতা আছে তেমনই ছোট ছোট কথায় মান-অভিমান, আর মায়েদের, বাবাদের অনেক না পাওয়ার গল্পও থাকে।
একজন মা যেরকম নতুন পরিবারে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন একজন বাবাও নিজেকে ভেঙে নতুন করে নিজের পরিবেশকে সাজাতে চেষ্টা করেন। ‘মেয়েবেলা’ মায়েদের, মেয়েদের মনে লুকিয়ে থাকা যন্ত্রনাটা তুলে ধরতে চেয়েছিল পর্দায়। আর এখানে মুখ্য চরিত্র হিসাবে ছিল ‘বীথিকা’ চরিত্রটি। যে একদিন বিয়ের পর নিজের সবকিছুকে সংসারের ঘেরাটোপে আটকে ফেলেছিল। সে চাইলেও পারেনি নিজেকে মুক্ত করতে। ধীরে ধীরে তার সব স্বপ্ন সংসারে পরিণত হয়েছিল।
মৌ বীথির ছেলের বৌ। নিজের বান্ধবীর মেয়ে হিসাবে মৌয়ের প্রতি রাগ থাকলেও ছেলের বৌ হিসাবে মৌকে নিজের পরিস্থিতিতে কখনই দেখতে চাননি বীথি। তিনি যখন দেখেছেন তার ছেলে বৌয়ের স্বপ্নকে, ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিচ্ছে কোথাও গিয়ে তিনি খুশি হয়েছেন। বীথি ইচ্ছা করে মৌ ডোডোর সম্পর্ক নষ্ট করতে চাইছে জানতে পেরেও তার মনটা বোঝার চেষ্টা করেছিল মৌ। সে সবার সামনে বিথীকে অপরাধী সাজায়নি, বরং চেয়েছে বীথির মনের ক্ষতটা সরিয়ে তুলতে।
আর অন্যদিকে চাঁদনী, নিজের বারো বছরের ভালোবাসাকে হারিয়ে যে একপ্রকার সব দিক থেকে ভেঙে পড়েছিল। প্রতিষ্ঠিত হয়েও সে নিজেকে মুক্ত করতে পারছিলনা। তবে ডোডোর কথায় যখন চাঁদনী উপলব্ধি করল যে তারা অনেকটা এগিয়ে এসেছে আর পিছনে ফিরে তাকানো সম্ভব নয় তখন সে নিজেই সবকিছু থেকে দূরে গিয়ে নিজের জন্য বাঁচার পথ খুঁজে নীল। তবে এত সুন্দর একটা গল্পের অকাল মৃত্যু ঘটল। টিআরপির কাছে কিংবা অন্য কোনো কারণে থেমে গেল ‘মেয়েবেলা’র যাত্রা।