টলিউড ছেড়ে এবার হলিউডে পাড়ি দিলেন ৯০ দশকের বাঙালি অভিনেতা ভিক্টর ব্যানার্জী (Victor Banerjee)। অভিনেতা যে শুধু বাংলাতেই কাজ করতেন তেমনটা নয়, তিনি বাংলা, হিন্দি, অসমীয়া, ইংরাজি সব ভাষাতেই সমান ভাবে কাজ করেছেন। তার অভিনয় সর্বত্র প্রসংশনীয়। তিনি তার অভিনয়ের স্বীকৃতি স্বরূপ অনেক পুরস্কার ও সম্মাননাও পেয়েছেন। তবে অভিনেতা বাংলায় বেশি কাজ করলেও বাংলা ইন্ডাস্ট্রি থেকে মেলেনি তার যোগ্য সন্মান।
সম্প্রতি, এই গরিষ্ঠ অভিনেতার একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ ভাইরাল হয়েছে। ছবিটি দেখে নেটিজেনরা রীতিমতো চমকপ্রদ হয়েছেন। অনেকে মন্তব্যও করেছেন ‘২৫ শে বৈশাখের পূর্বেই বিশ্বকবির দেখা মিলেছে’। অবিকল সেই চিরচেনা প্রতিচ্ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভেসে বেড়াচ্ছে। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে স্মরণ করলে তার যে প্রতিচ্ছবি আপামর বাঙালির চোখের সামনে ভেসে ওঠে, সেই ঠাকুরই যেন আবার জীবন্ত হয়ে ফিরে এসেছেন।
অভিনেতা ভিক্টর ব্যানার্জীর (Victor Banerjee) ছবি দেখে এমভাবেই বিচলিত হয়ে উঠেছে সমগ্র নেটপাড়া। ৬ ই মে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore) ও আর্জেন্টিনার এক লেখিকা ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোকে (Victoria Ocampo) ঘিরে একটি চলচ্চিত্র আসতে চলেছে হলিউডে ‘থিংকিং অফ হিম (Thinking of Him)’। যাতে কবিগুরুর ভূমিকায় অভিনয় করতে চলেছেন অভিনেতা ভিক্টর ব্যানার্জী। এই ছবিতে এক বিশেষ ভূমিকায় বাঙালি অভিনেত্রী রাইমা সেনও।
ছবির গল্প অনুসারে, এই চলচ্চিত্রটিতে দুটি পরিসর দেখানো হবে একটি লেখিকা ভিক্টোরিয়া ও ঠাকুরের গল্পকে ঘিরে তাদের মাঝের আত্মিক সম্পর্কের বহিঃপ্রকাশ আর অন্যদিকে থাকবে কবির লেখার প্রতি অন্ধ ভালোবাসার টান। গল্পটি ১৯২৪ সালের আর্জেন্টিনা সীমার কাছে জাহাজে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (Rabindranath Tagore) অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তখন তার এই অনুরাগী তাকে নিজের বাড়িতে রেখে শ্রুশ্রুষা করেছিলেন। সেইসময় তাদের মধ্যে গড়ে ওঠা অজানা কাহিনীরই বহিঃপ্রকাশক হতে চলেছে বড়ো পর্দায়। এই ছবিটি তৈরির প্রস্তুতি হলিউডে হলেও বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক সূর্য কুমারও এই ছবির সাথে জড়িত।
প্রসঙ্গত, অভিনেতার নিজের অভিনয়ের নিপুণতা দিয়ে এই চরিত্রের পরীক্ষায় কতটা সফল হতে পারেন তা দেখা জন্য আগ্রহী বিশ্বের সকল কবিপ্রেমীরা। অভিনেতা সব সময় বিপদে সাধারণ মানুষের পশে দাঁড়ানোর জন্য সক্রিয় প্রচেষ্টা করে থাকেন। শোনা যায়, উত্তরকাশি ভূমিকম্পের সময় অভিনেতা ও তার স্ত্রী অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে বেশ সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলেন। নিজের তৎপরতায় একাই ত্রাণ পৌঁছাতে ছুতে গিয়েছিলেন। আবার প্রবল স্ত্রীর সহায়তায় ঘূর্ণিঝড়ের তছনছ হয়ে যাওয়া ওড়িষ্যা গৃহহীনদের বসবাসের স্বার্থে মাটির কুঁড়ে ঘর পুনর্নির্মাণ করতেও পিছপা হননি।
অভিনেতা শুধু অভিনয় করতেই ভালোবাসেননা, অভিনয়ের পাশাপাশি তিনি হকি ও ফুটবল এর মতো খেলাতেও অংশগ্রহণ করেছেন। আসামে অভিনেতার বাবা দৃষ্টিহীনদের জন্য একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। পরবর্তী সময়ে অভিনেতা নিজে সেই স্কুলের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন আর সেই স্কুলটিকে দৃষ্টিহীনদের জন্য সেরা স্কুলগুলির মধ্যে একটি হিসাবে গড়ে তোলেন।