সংগীত জগতের একজন বিখ্যাত ভারতীয় জনপ্রিয় শিল্পী হলেন সোনু নিগম (Sonu Nigam)। মাত্র চার বছর বয়স থেকেই তিনি মঞ্চে গান গেয়েছেন। যিনি গান করেছেন হিন্দি, কন্নড়, উড়িয়া, তামিল, অসমীয়া, পাঞ্জাবী, বাংলা, মালায়ালাম, মারাঠি, তেলুগু এবং নেপালী ছবিতে। ছবিতে প্লেব্যাক করার পাশাপাশি, পপ অ্যালবমের শিল্পী হিসেবেও বেশ জনপ্রিয়। তাঁর কন্ঠের গাওয়া গান আজও মানুষ সুখে, দুঃখে শোনেন। এই বিখ্যাত জনপ্রিয় গায়ককে বলিউড সিনেমাতে প্লেব্যাক করতে তেমন একটা দেখা যায়না।
বলিউডের প্রতি কিছুটা ক্ষোভ রয়েছে বলেই তিনি নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন বলিউড দুনিয়া থেকে। বলিউডে এখন সুযোগ পাচ্ছেন নতুন প্রতিভা, তাই তাঁর মত শিল্পীদের কোণঠাসা হতে হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বলিউডের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি বলেছিলেন, ‘আজকাল একটা গান বিভিন্ন শিল্পীদের দিয়ে করানো হয়, তারপর সেই গান প্রযোজকদের কাছে পাঠানো হয়, তারপর তারাই বেছে নেন কোন শিল্পীর গান ব্যবহার করা হবে সিনেমায়, এটা যেন স্বয়ংবর সভা, আমি ভিখারি নই, কারোর কাছে কাজের জন্য ভিক্ষা চাইতে যাবনা।’
বর্তমানে গায়ককে বিভিন্ন রিয়েলিটি শোয়ের মঞ্চে বিচারক হিসেবে দেখা যাচ্ছে, রিয়েলিটি শোয়ের প্রতিও তাঁর ক্ষোভ রয়েছে। বর্তমানে রিয়েলিটি শো গুলি নাচ-গান আর রোম্যান্স দিয়ে পরিপূর্ণ। রিয়েলিটি শো গুলির টিআরপি বাড়াতে এত বেশি পরিমাণ রোম্যান্স ঢোকানো হয় যে রিয়েলিটি শোয়ের আসল বিষয়বস্তু টাই হারিয়ে যায়।
একটা রিয়েলিটি শো সেটা গান হোক বা নাচ, সেটা একটা প্রতিযোগীতার মঞ্চ। সেই মঞ্চের মাধ্যমেই উঠে আসে সেরার সেরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিল্পীরা। কিন্তু বর্তমানে টিআরপি বাড়াতে রিয়েলিটি শোয়ের মঞ্চের প্রতিযোগিতার মূল কেন্দ্র বিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে রোম্যান্টিজম! এতেই ঘোর আপত্তি সোনু নিগমের।
এছাড়াও তিনি বিরক্তি প্রকাশ করে বলেছেন, ‘২৭ বছর ধরে একাধিক হিন্দি রিয়েলিটি শোয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম, কিন্তু সেই শো ছেড়ে বাংলায় এসেছিলাম, কারণ বিরক্ত হয়ে গিয়েছিলাম হিন্দি শো-তে মিথ্যে বলে বলে। হিন্দি রিয়েলিটি শো তে বিচারকদের ভালো না লাগলেও ভালো বলতে হবে। এমনটাই ছিল নির্মাতাদের আদেশ’।
তবে গায়ক নিজের আত্মসম্মান নিয়ে সগর্বে বাঁচতে পছন্দ করেন। বরাবরই তিনি একজন প্রতিবাদী মানুষ, সাদাকে সাদা আর কালো কে কালোই বলে এসেছেন। তাই হয়ত, বলিউডের ঝা চকচকে জীবন থেকে নিজেকে সরিয়ে এনেছেন, শুধুমাত্র নিজের আত্মসম্মানবোধের ভিত্তিতে। বলিউডে তাই তার গলা আর বিশেষ শোনা যায়না।