টলি থেকে বলি সব ইন্ডাস্ট্রির তারকাদের সবসময় হাসিখুশি দেখা যায় ক্যামেরার সামনে। একদিকে অর্থ, সম্পত্তি, আর অন্যদিকে নাম-যশ-খ্যাতি। এই নিয়ে তাঁরা বেশ সফল। কিন্তু ক্যামেরার পিছনে তাদের জীবনটা আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মতোই। সেখানে সবসময় ওঠাপড়া লেগেই আছে। কোনো কোনো অভিনেতা অভিনেত্রী টাকা পয়সা নিয়েও সুখী ছিলেন না, তারা চেয়েছিলেন একটুকরো শান্তি, আর তাই অনেক তারকাকেই দেখেছি আমরা অকালে চলে যেতে।
সত্যিই তো সবকিছুর ভিড়ে যদি না থাকে শান্তি, তাহলে তো জীবনটাই শূন্য মনে হয় তাই না? টাকা-পয়সা, নাম-যশ সবকিছুর ভিড়েও মানুষ অনেক সময় একা হয়ে পরে। আর তখন বেঁচে থাকার ইচ্ছেটা ভিতর থেকে ক্রমশ মরে যায়। আজ এমনই কিছু অভিনেতা অভিনেত্রীদের কথা বলব, যারা বিখ্যাত হয়েও বেছে নিয়েছিলেন মৃত্যুর পথ। আবার কেউ কেউ ভাগ্যের পরিহাসে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন (died too early)।
ঐন্দ্রিলা শর্মা (Aindrila Sharma) : টানা ২০ দিনের লড়াই শেষে না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন ঐন্দ্রিলা শর্মা। ২০১৭ সালে ঝুমুর সিরিয়ালের হাত ধরে পর্দায় এসেছিলেন অভিনেত্রী। এরপর একাধিক সিরিয়ালে দেখা গিয়েছে তাকে। দুর্দান্ত অভিনয়ের পাশাপাশি অসাধারণ ইচ্ছাশক্তির পরিচয় দিয়েছেন তিনি। দুবার ক্যান্সার আক্রান্ত হয়েও সুস্থ হয়ে ফিরেছিলেন। কিন্তু ১লা নভেম্বর ব্রেন স্ট্রোক হওয়ার পর একটানা লড়াই করে চিরঘুমের দেশে পাড়ি দিলেন অভিনেত্রী।
পায়েল চক্রবর্তী (Payel Chakraborty) : টলিউড ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় মুখ পায়েল চক্রবর্তী। যিনি অভিনয় করেছেন ‘চোখের তারা তুই’, ‘জড়োয়ার ঝুমকো’ এবং ‘গোয়েন্দা গিন্নি’র মত জনপ্রিয় ধারাবাহিকে। এছাড়াও দেবের জনপ্রিয় ছবি ‘ককপিট’-এও অভিনয় করেছেন। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে শিলিগুড়ি তে একটি হোটেলে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। জানা যায়, অভিনয়ের পাশাপাশি সংসারে সময় দিতে না পারার জন্য ২০১৫ সালে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। তার ৯ বছরের একটি ছেলে ছিল, সে তার স্বামীর সাথে থাকে, ছেলেকে কাছে না পাওয়ায় মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন। আর এর কারণেই সে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
দিশা গাঙ্গুলি (Disha Ganguly) : টলি ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় মুখ দিশা গাঙ্গুলি। যিনি অভিনয় করেছেন ‘বউ কথা কও’, ‘কনকাঞ্জলী’ নামক ধারাবাহিকে। এই অভিনেত্রী ২০১৫ সালে আত্মহত্যা করেন। দক্ষিণ কলকাতার পর্ণশ্রীর ফ্ল্যাট থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল অভিনেতা বিবস্বান ঘোষ এর সাথে সম্পর্কের টানাপোড়েনের জেরে তাঁর এই মৃত্যু ঘটেছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত এই খবর সত্যি বলে বিবেচিত হয়নি।
রনি চক্রবর্তী (Rony Chakraborty) : টলি ইন্ডাস্ট্রির জনপ্রিয় অভিনেতা রণেন চক্রবর্তী। যিনি অভিনয় করেছেন ‘বয়েই গেল’, ‘জলনুপুর’ ধারাবাহিকে। এই অভিনেতার ২০১৫ সালে মৃত্যু ঘটে। বন্ধুদের সাথে সাঁতার কাটতে কাটতে হঠাৎ তিনি জলে ডুবে যান। কী কারণে তাঁর মৃত্যু ঘটে আজও সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায়নি।
পীযূষ গঙ্গোপাধ্যায় (Pijush Ganguly) : টলি ইন্ডাস্ট্রির একজন জনপ্রিয় অভিনেতা। ছোটো পর্দা থেকে বড় পর্দা সবেতেই তিনি অভিনয় করেছেন। তিনি অভিনয় করেছেন ‘জল নুপুর’ ধারাবাহিকে। এই ধারবাহিক থেকেই তাঁকে সবাই চিনত। যদিও এর আগে তিনি অনেক বিখ্যাত বিখ্যাত সিনেমায় অভিনয় করেছেন। তিনি ২০১৫ সালে গাড়ি অ্যাক্সিডেন্টে মারা যান। সাঁতরাগাছি সেতুতে তাঁর গাড়ির সাথে একটি লরির সঙ্গে ধাক্কায় তাঁর মৃত্যু হয়। ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে তিনি আজ আমাদের সাথে নেই।
রীতা কয়রাল (Rita Koiral) : এই অভিনেত্রী ছোটো পর্দা থেকে বড় পর্দা সবেতেই অভিনয় করেছেন। তাঁর খল চরিত্রে অভিনয় তাঁকে জনপ্রিয় করে তুলেছে। তিনি অভিনয় করেছেন, ‘রাজমহল’, ‘জীবন নিয়ে খেলা’, ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ সহ আরও অনেক বিখ্যাত সিনেমায়। এছাড়াও ছোটো পর্দায়, ‘এক আকাশের নীচে’, ‘সাত পাঁকে বাঁধা’, ‘রাখী বন্ধন’ প্রভৃতি ধারাবাহিকে। এই অভিনেত্রীর মৃত্যুর কারণ হিসেবে জানা যায়, তাঁর লিভারে ক্যানসার হওয়ায়, তাঁর মৃত্যু ঘটে।