বর্ষায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি, দেখুন বাংলার শস্য বীমা প্রকল্পে ক্ষতিপূরণ মিলবে কিভাবে

Bangla Shasya Bima: পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু বর্তমানে আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে খরা, অতিবৃষ্টি বা অনাবৃষ্টি কৃষকদের কাজকে আরো কঠিন করে

Antara Nag

bangla shasya bima 2025

Bangla Shasya Bima: পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত। কিন্তু বর্তমানে আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে খরা, অতিবৃষ্টি বা অনাবৃষ্টি কৃষকদের কাজকে আরো কঠিন করে তুলেছে। তাই নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েই কৃষকরা জমিতে ফসল ফলিয়ে থাকেন। কৃষকদের অতি কষ্ট করে তৈরি করা ফসল যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে নষ্ট হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে পথে বসতে হয় সেই কৃষকদের।

কৃষকদের এই সমস্যা থেকে বাঁচাতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কৃষকদের ফসলের উপর বীমা (Bangla Shasya Bima) করে থাকে। কোন কারনে ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হলে কৃষকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সেই বীমার টাকা পাঠিয়ে দেয় রাজ্য সরকার।

বাংলা শস্য বিমা ২০২৫ | Bangla Shasya Bima

পশ্চিমবঙ্গের ফসল উৎপাদনের সময় মূলত দুটি একটি খারিফ, অন্যটি রবি। সেই মোতাবেক প্রত্যেক কৃষককে বছরে দুইবার বাংলা শস্য বীমা প্রকল্পের ফর্ম জমা করতে হয়। তাই বর্তমানে খারিফ শস্যের জন্য ফর্ম জমা নেওয়ার কাজ চলছে। আজকের প্রতিবেদনে জানানো হলো কিভাবে এই ফর্ম জমা দিতে হবে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার বাংলা শস্য বীমার অধীনে বেশ কয়েকটি স্তরে ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের উপর ক্ষতিপূরণ দিয়ে থাকে। নিচে স্তরগুলি সম্পর্কে সাধারণভাবে জ্ঞাত করা হলো।

শস্য বীমায় কত মিলবে ক্ষতিপূরণ

  1. বপনজনিত বিফলতা:- প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে বীমার আওতায় থাকা এলাকার ধান যদি ৫০ শতাংশ বা তার অধিক জায়গায় বপনজনিত বিফলতার সম্মুখীন হয়, তবে বাংলা শস্য বিমার আওতায় ২৫ শতাংশ ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায়। তবে ক্ষতিপূরণের সাথে সাথে বীমার মেয়াদও শেষ হয়ে যায়।
  2. অন্তর্বর্তীকালীন ক্ষতিপূরণ:- বীজ বপন করা হয়ে গেলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বীমার আওতায় থাকা অঞ্চলে ৫০ শতাংশ বা তার অধিক জায়গায় ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলে ৫০ শতাংশ ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে ও ক্ষতিপূরণ পাওয়ার সাথে সাথে বিমার মেয়াদ শেষ হয়ে যায়।
  3. স্থানীয় বিপর্যয়:- কোন ছোট এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে, যথা- অতি বৃষ্টি, শিলা বৃষ্টি, প্লাবন, ভূমিধস ইত্যাদির ফলে ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হলে ফসলের উপর ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়।
  4. ফসল কাটার দুই সপ্তাহের মধ্যে যদি ঘূর্ণিঝড় অথবা অকাল বর্ষণ হয় তাহলে সেক্ষেত্রেও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়।

বীমার আওতায় থাকা ফসল

বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বাংলা শস্য বীমার আওতায় দুইটি ফসলের উপর ক্ষতিপূরণ দিয়ে থাকে। যথা- ধান এবং ভুট্টা। ধানের ক্ষেত্রে বীমার জন্য আবেদন করতে হবে ৩০শে সেপ্টেম্বর ২০২৫ এর মধ্যে এবং ভুট্টার ক্ষেত্রে বীমা পাওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে ৩১শে ২০২৫ এর মধ্যে।

বীমার খরচ ও নিয়ম

বাংলার শস্য বীমা প্রকল্পের জন্য কৃষকদের কোন টাকা দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। কৃষকদের তরফ থেকে রাজ্য সরকারই বীমা কোম্পানিকে প্রয়োজনীয় অর্থ মিটিয়ে দিয়ে থাকে।

বীমা করার নিয়ম

কৃষককে প্রথমে বাংলা শস্য বীমা প্রকল্পের ফর্ম পূরণ করতে হবে। তারপর ফর্মে উল্লিখিত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যুক্ত করতে হবে। তারপর সমস্ত কাগজপত্র একসাথে করে কৃষি অফিস, পঞ্চায়েত অফিস কিংবা আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান ক্যাম্পে জমা করতে হবে।

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

বীমা করতে যে সমস্ত কাগজপত্র দরকার হবে সেগুলি হল

  • ১) ভোটার কার্ড।
  • ২) আধার কার্ড।
  • ৩) ব্যাংকের পাস বই।
  • ৪) জমির খতিয়ান অথবা পরচা বা পাট্টা বা দলিল।
  • ৫) ভাগচাষীদের ক্ষেত্রে জমির আয়তন সমেত শংসাপত্র।
  • ৬) ফসল রোপনের শংসাপত্র।

এছাড়াও যদি বাংলা শস্য বীমা সংক্রান্ত কোনো তথ্য জানার প্রয়োজন থাকে তাহলে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট https://banglashasyabima.net এ ভিসিট করতে পারেন।