আজ ২০ শে জুন ২০২৩, এই বছরের রথযাত্রা আজ। এই রথযাত্রাকে ঘিরে প্রতিবছর ভক্তসমাগম বৃদ্ধি পায় পুরী ধামে। এই দিন দেবতা নিজে রথে চড়ে তার ভক্তদের সাথে সাক্ষাৎ করতে বের হন। পুরী ঘুরতে যাননি এমন মানুষের সংখ্যা নেহাতই হাতে গোনা। পাশাপাশি পুরীর মন্দিরকে ঘিরে রয়েছে অনেক অজানা রহস্য। যা সময় বয়ে গেলেও আজও অমীমাংসিতই থেকে গেছে।
পুরীর মাহাত্মের টানে প্রতিদিন সেখানে ছুটে যান লক্ষ লক্ষ ভক্ত। কথিত আছে রথযাত্রার আগে সমুদ্রতটে ভেসে আসা প্রকান্ড কাঠেই গড়ে ওঠে জগন্নাথ দেবের রথ। এই রথের নির্মাণ কালে অনেক নিয়ম পালন করা হয়ে থাকে। যেমন, রথ তৈরীর কাঠ কেবল নিম গাছ বা হাঁসি গাছের হতে হবে। আবার সেই গাছের গুঁড়ি কাটতে ব্যবহার করা হয় সোনার কুঠার।
তিন দেবতার রথের আছে আলাদা আলাদা নাম। জগন্নাথ দেবের রথের নাম ‘নন্দীঘোষ’, বলরাম দেবের রথের নাম ‘তালধ্বজ’ আর সুভদ্রার দেবীর রথের নাম ‘পদ্মধ্বজ’। রথের দিন দাদা বলরাম ও বোন সুভদ্রার সঙ্গে জগন্নাথ দেব গুন্ডিচা মন্দিরে প্রস্থান করেন। সেখান থেকে সাতদিন পর নিজ মন্দিরে ফিরে আসেন। এই ভ্রমণই প্রভুর মাসির বাড়ি যাত্রা বলে পরিচিত। ঐদিন রথের রশিতে টান দেওয়ার আগে পথ পরিষ্কার করা হয়ে থাকে সোনার ঝাড়ু ও সুগন্ধি জল দিয়ে। তারপরই রথে টান হয়।
রইল পুরীর মন্দিরের অজানা ৫ রহস্য :
১. পুরীর মন্দিরের চূড়ার ধ্বজ প্রত্যহ পরিবর্তন করা হয়, আর সেই ধ্বজ সর্বদা হওয়ার বিপরীতে উড়তে থাকে। যার কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আজও পাওয়া যায়নি।
২. পুরীর মন্দিরের পাকশালাকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় রান্নাঘর বলা হয়ে থাকে। কারণ এখানে ভোগ কখনও কম পড়েনা। আর ভোগ কখনও নষ্টও হয়ে যায়না। আর এখানে খুবই আশ্চর্য পদ্ধতিতে ভোগ রান্না হয়ে থাকে। একের উপর এক হাঁড়ি চাপিয়ে।
৩. পুরীর মন্দিরের সিংহভাগে এমন কোনো চুম্বকীয় শক্তি আছে যা মন্দিরকে সব রকম বিপদ থেকে রক্ষা করে। এমনকি মন্দিরের উপর দিয়ে কিছু উড়ে যেতে পারেনা। পক্ষীরাও না।
৪. এই মন্দিরের চূড়ার অদ্ভুত ভাবেই ছায়া দেখতে পাওয়া যায়না। দিনের যেকোনো সময়, সূর্যের আলো যেদিকেই থাকুকনা কেন মন্দিরের চূড়ার ছায়া পড়েনা কখনোই।
৫. রথ নির্মাণে যে সমস্ত কাঠ ব্যবহার করা হয়, তার উৎস হলো পুরীর কাছেই দাশপাল্লা ও রানাপুর নামের দুটি জঙ্গল। যে পরিমাণ গাছ কাটা হয়, তার দ্বিগুণ পরিমাণ গাছ প্রতি বছর রোপণও করা হয় জঙ্গলে। আর এই রথ নির্মাণ কাজে কোনো আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার হয়না। আর অন্তত চৌদ্দশ কর্মী এই কাজ করেন।