আমাদের ব্যস্ত জীবনে খাওয়াদাওয়া ও অন্যান্য কিছু অভ্যাস বশত আমাদের শরীরের অনেক ক্ষতিসাধন হয়ে থাকে। আর বর্তমানে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রায় অনেকাংশের একটা বড় সমস্যা চুলের সমস্যা (Hair Problem)। যদিও এর জন্য অনেক কিছুই দায়ী হতে পারে। তবে অকারণে চুল ঝরে যাওয়া বা সময়ের অনেক আগেই চুলে পাক ধরা (White Hair Problem Solution) খুব সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এছাড়াও চুলের রুক্ষ-শুষ্কতা তো আছেই। চুল মানুষের সৌন্দর্যের আরেক অবিচ্ছেদ্য অংশ।
তাই চুল পড়ে গেলে বা চুলের অকালপক্কতা হলে কিংবা অন্যান্য সমস্যা জনিত কারণে সকলেই কম-বেশি চিন্তিত হয়ে পড়েন। আর বাজার থেকে নানানরকম পণ্য কিনে ব্যবহার করতে থাকেন। তবে এতে কিন্তু সমস্যা সমাধানের বদলে বেড়ে যেতে পারে কয়েকগুন। আসলে বাজারজাত পণ্যগুলি ক্ষতিকারণ রঞ্জক মিশ্রিত হয়ে থাকে। যাতে উপকারের বদলে ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি। তাই আজ আপনাদের এই অকালপক্কতার সমস্যা দূরীকরণে আমরা একদম ঘরোয়া ৫ টি পদ্ধতি নিয়ে হাজির হয়েছি। যার দারুন আপনারা উপকার পাবেন, দেখে নিন।
চুলের অকালপক্কতা দূরীকরণে কিছু মূল্যবান উপাদান ও তাদের ব্যবহারের উপকারিতা :
হেনা বা মেহেন্দি পাতা : যেদিন হেনা করবেন তার আগের দিন রাতে হেনা ভিজিয়ে রাখবেন। পরেরদিন চা এর লিকার তৈরী করে সেই লিকার ঠান্ডা হলে সেটা ভিজিয়ে রাখা হেনায় মিশিয়ে নিতে হবে। চুলে যদি রং আনতে চান তবে হেনা কোনো লোহার পাত্রে ভেজাবেন। আর যদি শুধু কন্ডিশনিং এর জন্য ব্যবহার করেন তবে যেকোন পাত্রে ভেজাতে পারেন। তারপর স্ক্যাল্পে না লাগিয়ে মাথায় মেখে ১ ঘন্টা মত রাখুন আর ধুয়ে নিয়ে শ্যাম্পু করে ফেলুন। সপ্তাহে অন্তত ২ দিন এটি ব্যবহার করুন।
কেশুতে পাতা : চুল কালো করতে কেশুতে পাতার ব্যবহার অপরিহার্য। একটি বাটিতে পরিমান মত কেশুতে পাতা, ১ চামচ পরিমানে মেথি গুঁড়ো, ১ টা ডিম সাদা অংশ বাদ দিয়ে, ২ চামচ টক দই আর ২ চামচ নারিকেল তেল দিয়ে ভালোভাবে পেস্ট তৈরী করে নিতে হবে। তারপর মাথায় ভালো করে স্ক্যাল্প থেকে শুরু করে চুলের আগা পর্যন্ত পেস্টটা মেখে ১ ঘন্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন তারপর শ্যাম্পু করে নিন। সপ্তাহে ১ বার এটি ব্যবহার করতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ এই দোলে আপনার চুলকে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে মেনে চলুন এই ৭ টি উপায়!
কারিপাতা : চুলের স্বাস্থ্য রক্ষায় কারিপাতা বেশ উপকারী। কারিপাতায় আছে ‘ভিটামিন এ’, ‘ভিটামিন ই’, ‘ক্যালসিয়াম’, ‘কপার’, ‘তামা’ ইত্যাদি খনিজ থাকে। তাই চুলের যত্নে এটি ভীষণ উপকারী। সপ্তাহে অন্তত ২ থেকে ৩ দিন কারিপাতা এই বিশেষ প্যাক চুলে ব্যবহার করলে অকালপক্কতাও দূর হবে আর চুল হবে বেশ মোলায়েম। একটা পাত্রে নারকেল তেলের সাথে কারিপাতা কালচে রং হওয়া পর্যন্ত ফুটিয়ে নিতে হবে। তারপর ওই মিশ্রণ ঠান্ডা হলে চুলে ভালো করে লাগিয়ে কিছুক্ষন রেখে ধুয়ে নিন। তারপর হালকা শ্যাম্পু করে নেবেন।
আরও পড়ুনঃ গাজরে রয়েছে বহু পুষ্টি গুণ, জটিল থেকে জটিল রোগ সারিয়ে তুলবে অনায়াসে!
পিঁয়াজ : মাথায় নতুন চুল গজাতে পিঁয়াজ যে ভীষণ রকম উপকারী তা আমরা অনেকেই জানি। তবে পিঁয়াজ কিন্তু অকালপক্কতা দূর করতেও বিশেষ ভাবে উপকারী। পিঁয়াজের এই বিশেষ পেস্ট মাথায় সপ্তাহে অন্তত ৩-৪ দিন ব্যবহার করবেন। ফল পাবেন হাতেনাতে। পিঁয়াজকে মিক্সারে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিয়ে তাতে লেবুর রস যোগ করে দিন। মাথায় ভালো করে মেখে শুখনো করে নিন। তারপর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
আমলকি : চুলের যত্নে আমলকিও সমান উপকারী উপাদান। আমলকি পেস্ট করে নিয়ে কিংবা গুঁড়ো করে নিয়ে যদি তা নারকেল তেলের সাথে ফুটিয়ে মাখেন। তবে চুলে দারুন উপকার পাবেন। এই তেল রাতে মেখে রাখুন। আর সকালে শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিষ্কার করে ধুয়ে নিন। এই উপায়ে আপনার চুলের অকালপক্কতা দূর হবে কোনোরকম চুলের ক্ষতিসাধন ছাড়াই।