ডিসেম্বর মানেই শীত। ডিসেম্বর মানেই আবার অনেকের পরীক্ষা শেষ, পড়াশোনা কিছু দিনের জন্য বিরতি। আর বিরতি মানেই একটা ছুটির আমেজ। বাচ্চাদের ছুটি থাকলেও অফিসের তো আর ছুটি নেই, কিন্তু সারা বছরের বোরিংনেস কাটানোর জন্য, একদিনের তো চড়ুইভাতি করায় যায় তাই না! আর আজ রইল সেই ঠিকানা। দেখে নিন, আর সময় করে চলে যান। ছুটি কাটানোর কিছু মনোরম স্থানে (Weekend Destination)।
পানিত্রাস (Panitras) : কলকাতা থেকে মাত্র ৬০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই স্থান। রূপনারায়ণ নদীর ধারে এই গ্রামে গিয়ে আপনি বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে হইহই করতে করতে চড়ুই ভাতি করতে পারবেন। আর গ্রাম মানেই, শীতের সময় একটা আলাদা রকম পরিবেশ, একটা আলাদা গন্ধ অনুভব করা যায়। আর সেই স্বাদ অনুভব করতে চলে যান এখানে। তবে এখানে শুধু গ্রামের রস আস্বাদন করবেন তা কিন্তু নয়, আরও একটা ঐতিহ্যের সাক্ষী হবেন। কারণ এই গ্রামেই রয়েছে বিশিষ্ট কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি। তাই পিকনিকও হবে সাথে বাঙালীর ঐতিহ্যের সাক্ষীও হবেন। হাওড়া স্টেশন থেকে পাঁশকুড়া লোকাল ধরে দেউলটি স্টেশনে নামবেন, এরপর অটো ধরে চলে যান সুন্দর গন্তব্যে।
গাদিয়াড়া (Gadiara) : রূপনারায়ণ , ভাগীরথী এবং হলদি নদীর সঙ্গমস্থলে অবস্থিত এই গাদিয়াড়া। নদীতীরের শান্ত নিরিবিলি পরিবেশ, গাছগাছালি, পাখির কলরবের সাক্ষী হতে চান, তাহলে এখানে যেতেই পারেন। ভাবছেন কীভাবে যাবেন? ধর্মতলা থেকে বাসে করে পৌঁছে যেতে পারেন এখানে।
বাওয়ালি রাজবাড়ি (Baowali Rajbari) : কলকাতা থেকে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে এই রাজবাড়ির নাম সকলেরই চেনা। বিশেষ করে রাজ চক্রবর্তী এবং শুভশ্রীর বিয়ের পর থেকেই এই রাজবাড়ির একটা আলাদা ঐতিহ্য বেড়ে গেছে । এই রাজবাড়ির ভিতরে রাজকীয় আমেজে পিকনিক করতে পারবেন। যদি ইচ্ছা হয়, এখানে একদিনের জন্য থেকেও যেতে পারেন সব প্যাকেজ এখানে পাবেন। চাইলে মাটির থালায় খাওয়া দাওয়ারও ব্যবস্থা রয়েছে। শিয়ালদহ স্টেশন থেকে আসুন বজবজ স্টেশনে। ওখান থেকে অটো করে চলে যান বাওয়ালি রাজবাড়িতে।
গড়চুমুক (Gorchumuk) : হাওড়া জেলার জনপ্রিয় এই পিকনিক স্পট হল গড়চুমুক। এখানে নদীর অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে দেখতে যেমন পিকনিক করতে পারবেন, তেমনই দেখতে পাবেন মিনি চিড়িয়াখানা , ডিয়ার পার্ক ও ৫৮ গেট । তাহলে আর দেরি কেন চলে যান। হাওড়া থেকে উলুবেড়িয়ার ট্রেন ধরুন, ওখান থেকে অটো ধরে পৌঁছে যান গড়চুমুক।
ব্যারাকপুর (Barrackpore) : কলকাতার ঐতিহাসিক স্থান ব্যারাকপুর। এখানে যেমন পিকনিক করতে পারবেন, তেমনি দেখতে পাবেন ঐতিহাসিক জায়গা গুলি। এখানে অনেক শহীদের স্মৃতিসৌধ রয়েছে। এখানকার উল্লেখযোগ্য আকর্ষণ গুলি হল, গান্ধী ঘাট, মঙ্গল পান্ডে পার্ক, মহাত্মা গান্ধীর একটি জাদুঘর এবং জওহর কুঞ্জ গার্ডেন। শিয়ালদা থেকে ট্রেন ধরে পৌঁছে যান এই ব্যারাকপুরে।
অচিপুর (Achipur) : আমাদের কলকাতার একটা কলোনি জুড়ে থাকে চাইনিজরা, সেখানকার জায়গাকে বলা হয় চাইনা টাউন। দক্ষিণ ২৪ পরগণার এই অচিপুরে রয়েছে চাইনিজদের একটা কলোনি। সেই কলোনিতে ভ্রমণ করতে এবং নদীর ধারে পিকনিক করতে পৌঁছে যেতে পারেন। শিয়ালদহ স্টেশন থেকে আসুন বজবজ স্টেশনে। ওখান থেকে অটো করে চলে যান অচিপুরে।
চিন্তামণিকর বার্ড স্যাংচুয়ারি (Chintamani Kar Bird Sanctuary) : নামটা শুনলেই কেমন অ্যাডভেঞ্চার ফিল হচ্ছে তাই না। হ্যাঁ এখানে গিয়ে আপনি অ্যাডভেঞ্চারের স্বাদ পাবেন। দেখতে পাবেন মেটে ফিঙে, এশীয় কোকিল, ভুতুম প্যাঁচা সহ মোট ২০০টি প্রজাতির পাখি, ২০ প্রজাতির প্রজাপতি, এবং নানা প্রজাতির মাকড়সা। এই সুন্দর জিনিস উপভোগ করতে করতে পিকনিক করার জন্য আসতেই পারেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার এই চিন্তামণি কর পাখিরালয়ে। শিয়ালদা স্টেশন থেকে বালিগঞ্জে আসুন, এরপর ওখান থেকে নরেন্দ্রপুরের ট্রেন ধরে চলে যান এই বৈচিত্র্য ময় জায়গায়।
কল্যাণী পিকনিক গার্ডেন (Kalyani Picnic Garden) : কল্যাণী সীমান্তের কাছে এই পিকনিক গার্ডেন পিকনিক করতে যেতেই পারেন। চারিদিকে গাছগাছালিতে ভরা। প্রকৃতির স্বাদ নিতে পৌঁছে যান এখানে। শিয়ালদা থেকে কল্যাণী সীমান্ত ধরে পৌঁছে যান এই ডেস্টিনেশনে।
ফলতা (Falta) : হুগলি, ডায়মন্ডহারবার এবং রূপনারায়ণের মিলনস্থলের এই পিকনিক স্পটে পৌঁছে গিয়ে উপভোগ করতে পারেন চড়ুইভাতির আমেজ। শিয়ালদা থেকে ডায়মন্ডহারবার এর ট্রেন ধরে, ওখান থেকে অটো করে পৌঁছে যান এখানে।
সাঁতরাগাছি লেক (Santragachi Lake) : এই লেকে যেমন পাখির সমাগম দেখতে পাবেন, তেমনই উপভোগ করতে পারবেন পিকনিকের আমেজ। আর তাই পৌঁছে যান এই জায়গায়। হাওড়া থেকে সাঁতরাগাছির ট্রেন ধরে পৌঁছে যান এই শহরে।