কখন যে মানুষের কি হয়, তা কে বলতে পারে। আজ আছে কাল নেই। কেউ পৃথিবীতে ২৫ বছর থাকে তো আবার কেউ ৬৫ বছর। সম্প্রতি এমনই টলিউডের (Tollywood) একজন জনপ্রিয় স্বর্ণযুগের শিল্পী শ্রীলা মজুমদার (Sreela Majumder) চলে গেলেন না ফেরার দেশে। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর। দীর্ঘ তিন বছর ক্যানসারের সাথে লড়াই করে শুক্রবার সবাইকে ছেড়ে চলে গেলেন। মন খারাপ গোটা বিনোদন জগতে।
২৭ শে জানুয়ারি কেওড়াতলা মহাশ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত(Rituparna Sengupta), সুদীপ্তা চক্রবর্তী সহ আরও অনেকে। গত বছর নভেম্বর মাস থেকে শারিরীক অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে। তারপর ১৩-২০ জানুয়ারী পর্যন্ত ভর্তি ছিলেন টাটা মেডিক্যাল ক্যানসার সেন্টারে। তারপর বাড়ি নিয়ে আসা হয়।
ক্যানসারের কথা কাউকেই তিনি জানাননি। তিনি নিজের কথা অত কাউকে জানাতে পছন্দ করতেন না। এমনই একজন দুর্ধর্ষ অভিনেত্রীর চলে যাওয়ায় মন খারাপ সকলের, মন খারাপ ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের। ঋতুপর্ণা শ্রীলাকে দিদি বলে ডাকতেন, ঋতুর কথায়, ‘আমার দিদি চলে গেল, এত স্নেহ এত ভালোবাসা দিদি আমাকে দিয়েছেন যে আমি বলতে পারব না আমার দিদি নেই এই কথাটা আমি বলতে পারব না।
আরও পড়ুনঃ ‘একজনকে ভালোবেসে অন্যের সাথে ফ্লার্ট….’! প্রেম নিয়ে খোলামেলা আড্ডায় অহনা অভিনেত্রী ‘মিশকা’
এই মানুষটা আমাকে সবসময় বলে গেছেন ঋতু তুমি থেমোনা। কখনো ভাঙবে না সবসময় এগিয়ে যাবে’। ১৯৮০ সালে মৃণাল সেনের ‘পরশুরাম’ ছবির মধ্যে দিয়ে শুরু হয় অভিনয় যাত্রা। এরপর একে একে ‘এক দিন প্রতি দিন’, ‘আকালের সন্ধানে’, ‘খারিজ’, ‘ পূজা’ -এর মতো উল্লেখযোগ্য ছবিতে কাজ করেছেন। এছাড়াও ছবিতে। ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘চোখের বালি’ সিনেমায় ঐশ্বর্য রাইয়ের হয়ে কন্ঠ দিয়েছিলেন। শেষবার দেখা গিয়েছিল কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘ পালান’ এ।
কিন্তু এত বিখ্যাত এত দক্ষ অভিনেত্রী হওয়া সত্ত্বেও পর্দায় তাঁকে ঠিকঠাক ব্যবহার করা হয়নি। এটা তাঁর এবং তাঁর সহকর্মীদের আক্ষেপ। তাঁর এই কাজ প্রসঙ্গে ঋতুপর্ণা জানান, ‘এত বিখ্যাত বিখ্যাত কাজ তিনি করেছেন, আন্তর্জাতিক স্তরের পরিচালকদের সাথেও কাজ করেছেন। ওর সম্বন্ধে কিছু বলার জন্য আমি খুবই ক্ষুদ্র।
আরও পড়ুনঃ ‘চুলের মুঠি ধরে মার……’, ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে অকপট পর্দার ‘মেঘ’ তিতিক্ষা!
শেষে একটাই কথা বলব শ্রীলা মজুমদারের মত অভিনেত্রী বিনোদন দুনিয়ায় বিরল। শ্রীলা মজুমদার একটাই ছিলেন আর একটাই থাকবেন। তবে মাঝে একবার ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকের কাছে অনেক অভিমান জমা ছিল। যাঁরা শ্রীলাদির বন্ধু তাঁরা শ্রীলাদির কাজ মূল্যায়ন করেছেন। তাঁদের সবসময় আমি সম্মান করব। ওঁর মতো মধুর কন্ঠ আর কারোর কোনোদিনও হবে না। তুমি আমাদের কাছে সবসময় অমর হয়ে থাকবে আমার দিদি হয়ে।