দেশের ৫৪ বিশ্ববিদ্যালয় বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা ইউজিসির, বাংলার কয়টি? দেখুন তালিকা

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে সম্পূর্ণ তথ্য প্রকাশ না করায় দেশের ৫৪ টি বিশ্ববিদ্যালয় কে ডিফল্টার তালিকাভুক্ত করল ইউজিসি (University Grants Commission)। সংশোধনী মূলক ব্যবস্থা না নিলে

Nandini

university grants commission

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে সম্পূর্ণ তথ্য প্রকাশ না করায় দেশের ৫৪ টি বিশ্ববিদ্যালয় কে ডিফল্টার তালিকাভুক্ত করল ইউজিসি (University Grants Commission)। সংশোধনী মূলক ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে আরোপ করা শাস্তি অপেক্ষা করে আছে বলেও জানানো হয়েছে কমিশনের তরফ থেকে।

৫৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে ডিফল্টার ঘোষণা UGC-র

পশ্চিমবঙ্গ-সহ দেশের একাধিক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলির জন্য এক দুঃসংবাদ বয়ে নিয়ে এলো ইউনিভার্সিটি গ্র্যান্টস কমিশন। দেশের মোট ৫৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘খেলাপি’ বা ডিফল্টার ঘোষণা করেছে ইউজিসি। এই মর্মে ইউজিসি ওই ৫৪ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম প্রকাশ করে একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। ওই তালিকায় ইউজিসি তরফ থেকে জানানো হয়েছে ঠিক কি কারনে ওই বিশ্ববিদ্যালয় গুলিকে ডিফল্টার ঘোষণা করা হয়েছে।

ইউজিসি জানিয়েছে যে, এই সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলি তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে সঠিক এবং প্রয়োজনীয় তথ্য প্রকাশ করেনি। যার ফলে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে বাড়ির অভিভাবকরা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলি সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাচ্ছেন না। তাই বিভিন্ন সময়ে তৈরি হচ্ছে নানা বিভ্রান্তি। যে কারণে এই সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপর নেমে এলো ইউজিসির শাস্তির খাড়া।

বাংলার ডিফল্টার বিশ্ববিদ্যালয় কোনগুলি?

ইউজিসির এই তালিকায় সব থেকে বেশি রয়েছে মধ্যপ্রদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম। ৫৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৯টিই অবস্থিত এই রাজ্যে। এগুলি হল আর্যাবর্ত বিশ্ববিদ্যালয় (সেহোর), মানসরোবর গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি (সেহোর), আজিম প্রেমজি বিশ্ববিদ্যালয় (ভোপাল), জেএনসিটি প্রফেশনাল ইউনিভার্সিটি (ভোপাল), শুভম বিশ্ববিদ্যালয় (ভোপাল), জ্ঞানভর বিশ্ববিদ্যালয় (সাগর), ড. প্রীতি গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি (শিবপুরী), মহাকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (জব্বলপুর), মহর্ষি মহেশ যোগী বৈদিক বিশ্ববিদ্যালয় (জব্বলপুর)।

মধ্যপ্রদেশের পর এই তালিকায় সব থেকে বেশি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে গুজরাট থেকে। গুজরাট থেকে রয়েছে ৮টি বিশ্ববিদ্যালয়, সিকিম ও ত্রিপুরা থেকে রয়েছে ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়, ঝাড়খন্ড ও উত্তরাখন্ড থেকে রয়েছে ৪টি বিশ্ববিদ্যালয়, মনিপুর এবং বিহার ও ছত্রিশগড় থেকে রয়েছে ৩টি বিশ্ববিদ্যালয়, মহারাষ্ট্র এবং পাঞ্জাব থেকে ২টি বিশ্ববিদ্যালয়, এছাড়া পশ্চিমবঙ্গ, গোয়া, হরিয়ানা, কর্ণাটক এবং অসম থেকে ১টি করে বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে এই তালিকায়।

গত কয়েক মাস ধরেই এই সমস্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপর করা নজর রেখেছিল ইউজিসি। সেই সাথে গত জুলাই মাসে ২৩টি বিশ্ববিদ্যালয়কে সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সতর্কবার্তায় কাজ না হয় করা শাস্তির পথে হাটলো ইউজিসি। তবে শুধুমাত্র ডিফল্টার তালিকায় নাম তুলে দিয়েই ক্ষান্ত থাকেনি ইউজিসি। ইউনিভার্সিটি গ্রান্টস কমিশন জানিয়েছে, নিয়ম না মেনে চললে আগামী দিনে আরো কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে এই সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির বিরুদ্ধে।

এই বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে ইউজিসি সচিব মনীশ যোশী জানিয়েছেন যে, কোন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হওয়ার আগে ঐ শিক্ষার্থীর কাছে বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত সমস্ত নির্ভুল তথ্য থাকা অত্যন্ত জরুরি। অর্থাৎ ঐ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন কোর্সে ভর্তি হচ্ছে, শিক্ষার মাধ্যম, মূল্যায়ন পদ্ধতি, ইউজি, পিজি এবং পিএইচডি প্রোগ্রামে শিক্ষার্থীর সংখ্যা, ক্যাম্পাসের বাইরে চাকরির সুযোগ, অনুষদের যোগ্যতা, ক্রীড়া সুবিধা ও সংরক্ষণ সংক্রান্ত তথ্য, সর্বোপরি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি রয়েছে কিনা সেটা জানা আবশ্যক। আর এই সমস্ত তথ্য একজন শিক্ষার্থী পেয়ে থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকেই।

কিন্তু যে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় এই ধরনের তথ্য তাদের ওয়েবসাইটে জানায়নি তাদেরকেই ডিফল্টার বলে ঘোষণা করা হয়েছে। যার ফলে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা বেশ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। পূর্বেই বিশ্ববিদ্যালয় গুলিকে এই বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে কোন কাজ না হওয়ায় কমিশন এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে। তিনি আরো জানান অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় গুলি কোনরকম সংশোধনমূলক পদক্ষেপ না নিলে অদূর ভবিষ্যতে আরো কড়া ব্যবস্থা নেবে ইউনিভার্সিটি গ্রান্টস কমিশন।